৬ লাখ টাকা চুক্তিতে বড় ভাই খুন করিয়েছে মিস্টারকে

শরীফ মাছুম বিল্লাহ

হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরপোড়ামুখী গ্রামে হাসিম রাঢ়ীর পুত্র মিস্টার (৩৮) রাঢ়ী হত্যা মামলায় আল আমিন (১৬) ও রবিন (১৬)কে আটক করেছে হাইমচর থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে অবিশ্বাস্য ও চাঞ্ল্যকর তথ্য মিলেছে। হতভাগ্য বাবা বাদী : এক ছেলে হত্যার পরিকল্পনাকারী, অন্য ছেলে হত্যার শিকার

হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান জানান, মিস্টার রাঢ়ী হত্যা মামালায় সন্দেহজনক হিসেবে দু’জনকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আটক আল-আমিন ও রবিন হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, মিস্টারের বড় ভাই আকতারের সাথে ৬ লাখ টাকা চুক্তিতে মিস্টারকে হত্যা করেছে তারা।

গত ২২ এপ্রিল বুধবার বিকেল ৫টায় চরপোড়ামুখী বাদশা রাড়ী সুপারী বাগানে মিষ্টার রাড়ীকে হত্যা করা হয়, ২৩ এপ্রিল সকালে মিষ্টার এর লাশ এলাকাবাসী দেখতে পায়, সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ, ঘটনাস্থলে হত্যায় ব্যাবহারিত রুমাল, লাঠি উদ্ধার করে। ২৩ এপ্রিল মিষ্টার এর পিতা হাসিম রাড়ী বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামী উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৬ তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০২০।

এরপর হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে পুলিশ ব্যাপক তদন্ত চালায়। গোপন তথ্য ও সন্দেহজনকভাবে ২৬ এপ্রিল রোববার আল-আমিন (১৬) ও তার জেঠাত ভাগিনা রবিন কাজী (১৬)কে আটক করা হয়। তাদের উভয়ের বাড়ি চরপোড়ামুখী গ্রামে। আটকের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিন ও রবিন জানায়, মিস্টারের বড় ভাই আকতারের সাথে ৬ লাখ টাকা চুক্তিতে মিস্টারকে হত্যা করা হয়।

হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম জানান, মিস্টার হত্যায় আটক আল -আমিেরে তথ্যমতে মিস্টারকে হত্যা করলে তার ভাই আকতার রাঢ়ী আল-আমিন, রবিন ও পলাতক( নাম প্রকাশ করা হলো না) একজনসহ মোট ৩জনকে মোট ৬ লাখ টাকা দিবে।

মিস্টার হত্যা মামলায় আটক আল-আমিন ও রবিনকে সোমবার চাঁদপুর কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক রুমালওয়ালা এবং মিস্টারের ভাই আকতারকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নগদ অর্থ ও সম্পদ আত্মসাতের লোভে ৬ লাখ টাকা চুক্তিতে মিস্টারকে কুপিয়ে হত্যা করা হতে পারে বলে মনে করছে তদন্তে জড়িত একটি সূত্র।

মিস্টার রাঢ়ী হত্যাকান্ড বিষয়ে এলাকাবাসী জানায়, মিস্টার ও আকতার দু’ভাই এলাকায় বিভিন্ন মানুষজনের সুপারি বাগান লিজ (কট চুক্তিতে) নিয়ে ব্যবসা করতো। দু’ভাইয়ের ব্যবসা আলাদা ছিল। সূত্রটি আরো জানায়, সুপারির বাগান কট চুক্তি ব্যাবসা করে উভয়েই বেশ কিছু নগদ অর্থের মালিক হয়েছেন। দু’বছর পূর্বে মিস্টারের মা মারা যান। দু’জনেই অবিবাহিত। বাবা হাসিম রাঢ়ী বার্ধক্য অবস্থায় আছেন। এলাকায় মিস্টার বা তার ভাইয়ের প্রকাশ্য কোন শত্রুতা সম্পর্কে এলাকাবাসীর তেমন ধারণা নেই।

হত্যাকান্ডে জড়িত আল-আমিনের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, তার ভাগিনা এবং মিস্টারের আপন ভাইয়ের পরিকল্পনায় হত্যা করা হয়। হত্যায় জড়িতের দেয়া তথ্য মতে, গত ২০ এপ্রিল বুধবার মিস্টার কাজ শেষে বিকেল বেলা আল-আমিনের আমন্ত্রণে পরিকল্পনাকারীর পরিকল্পনা মোতাবেক পার্শ্ববর্তী বাগানে যায়, সেখানে যাওয়ার পর হামলাকারী মামা-ভাগিনা (দু’জনই আটক) ও পলাতক রুমালওয়ালা মিস্টারকে মাথায় আঘাত এবং মুখে রুমাল গুজে হত্যা নিশ্চিত করে।