খালেকুজ্জামান শামীম
হাজীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রান্ধুনীমুড়া মুন্সী বাড়ির কৃতী সন্তান মোঃ শামছুজ্জামান মুন্সী হাজীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম সূজাওয়াত আলী মুন্সীর পৌত্র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বিএসসির ছোট ভাই। এছাড়াও তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম হোসেন ইমাম হায়দার মুন্সীর ভাতিজা।
শামছুজ্জামান মুন্সী ওই বাড়ির সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মরহুম সুবেদার (অবঃ) আব্দুল হামিদ মুন্সীর তৃতীয় সন্তান। ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হাজীগঞ্জ শহর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসীন রয়েছেন।
আসছে অল্প ক’দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে হাজীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এই সম্মেলনটি ইতঃমধ্যে হাজীগঞ্জের আওয়ামী রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্ব পাচ্ছে। হাজীগঞ্জের রাজনীতিতে শহর কমিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অনেক গুরুত্ব বহন করে থাকে। তাই এই কমিটি নিয়ে সবার মাঝে কম-বেশি আগ্রহ বিদ্যমান। স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির বিশ্বস্ত রাজনীতিবিদ শামছুজ্জামান মুন্সী এবারে অনুষ্ঠিতব্য ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে হাজীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন। দীর্ঘ দু’যুগের অধিক সময় ধরে তিনি আওয়ামী রাজনীতি করে আসছেন। দলের সকল পর্যায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে তার ছিলো অগ্রণী ভূমিকা।
জানা যায়, রাজনৈতিক জীবনে শামছুজ্জামান মুন্সী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ পান ১৯৯৭ সালে, উপজেলা ছাত্রলীগের কোষাধ্যক্ষ হন ১৯৯৯ সালে। ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৬, ৭, ৯ ও ১০নং ইউনিয়ন ও পৌর ১০, ১১, ১২নং ওয়ার্ডের মনিটরিং কমিটির তিনি সদস্য ছিলেন। ২০০৩ সালে সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী শিল্পগোষ্ঠী হাজীগঞ্জ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক, ২০০০ সালে উপজেলা ছাত্রলীগ (উত্তরাঞ্চল) সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক, ২০০৪ সালে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, ২০০৫ সালে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ (শাহির পাটওয়ারী-মিঠুন ভদ্র) কমিটির সদস্য, ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য, ২০১২ সালে হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য পদে আসীন ছিলেন।
রাজনীতি করতে গিয়ে শামছুজ্জামান মুন্সীকে বহু বিষয়ে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ১৯৯৬ সালে ছাত্রলীগে থাকাকালে বিএনপি জোট সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে ছিলেন। একই বছর তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের হাতে লাঞ্ছিত হাজীগঞ্জের আওয়ামী লীগের শীর্ষ ক’জন রাজনীতিবিদকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার ও অস্ত্র-গুলিসহ কয়েক সন্ত্রাসীকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। একই চক্র ঐ সময় তার বসত বাড়িতে ঢুকে বসতঘর ভাংচুর আর পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগানো অবস্থায় বাড়ির অন্যরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। এরপর বিএনপি জোট ক্ষমতায় থাকাবস্থায় শামছু মুন্সীর নামে ৭টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে তাকে প্র্রায় ৩ বছরের মত পলাতক জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছে বলে জানান শামছুজ্জামান মুন্সী।
দলের জন্যে জীবনের দীর্ঘসময় কাজ করলেও কোনো দিন কারো কোনো ধরনের সুবিধা নেননি দাবি করে তিনি জানান, ১/১১তে নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে সবসময় রাজপথে ছিলাম ও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী গণস্বাক্ষর, গণঅনশনসহ দলের সকল কর্মসূচিতে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। ‘দলের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলে দলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আপনার পরিকল্পনা কী’ জানতে চাইলে শামছুজ্জামান মুন্সী সংক্ষিপ্তাকারে জানান, দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদেরকে কথা দিতে চাই, আমি যদি দলের কাউন্সিলরদের সুচিন্তিত রায়ে উক্ত পদে নির্বাচিত হই, তবে হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে তাদের মতামতের ভিত্তিতে দলের সাংগঠনিক নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দলের ভেঙে পড়া সাংগঠনিক কাঠামো পুনঃবিন্যাসে আত্মনিয়োগ করবো। যদি নির্বাচিত না হই তাহলে দলের একজন নিরলস কর্মী হিসেবে আজীবন দলের নেতা-কর্মীদের পাশেই থাকবো। একই সাথে তিনি হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে সবার দোয়া, ভালোবাসা, সমর্থন, সহযোগিতাসহ দলের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনের সফলতা ও হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সার্বিক মঙ্গল কামনা করেন।