চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীকে কুপিয়ে জখম করার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ৫ শতাধিক দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে হকার্স মার্কেটের ওইসব বন্ধ রাখা হয়। এরপর বিকেলে ব্যবসায়ীরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
এর আগে সোমবার (২০ জানুয়ারি) চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে কথা কাটাকাটির জের ধরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
আহতরা হলেন: চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী আলী হোসেন (৫৫) একই এলাকার বাসিন্দা ও কর্মচারী শিবলু কাজী (৩৮) শহরের ক্লাব রোডের মুকবুল হোসেন কাজীর ছেলে।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, ‘বিকেল ৩টার দিকে হকার্স মার্কেটের পিছনে রেললাইনের পাশের চায়ের দোকানে প্রথমে শিবলু ও ব্যবসায়ী বাবুলের সঙ্গে তিনজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় হকার্স মার্কেটে আমার ওপর হামলা এবং পরবর্তীতে তালুকদার বুটিকস নামে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী শিবলু কাজীকে (২৫) সুজন, নুরু ও মিঠুন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দোকানের সামনেই রক্তাক্ত জখম করে। পরে তারা পালিয়ে যান।’
তিনি জানান, এ ঘটনার পর মার্কেটের অন্যান্য ব্যবসায়ী ও কমিটির নেতারা তাদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সৈয়দ আহমেদ কাজল জানান, হাসপাতালে দুজনকে আনা হয়। এরমধ্যে শিবলু গুরুতর ও রক্তাক্ত জখম হওয়ার কারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
তালুকদার বুটিকসের মালিক হানিফ জানান, শিবলুর বন্ধু বাবুল। তারা দুপুরের খাবার শেষে ওই চায়ের দোকানে যান। সেখানে বাবুলের সঙ্গে ওই তিন যুবকের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের নিবৃত করেন শিবলু কাজী। পরে ওই তিন যুবক সংঘবদ্ধ হয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটায়। আহত শিবলুকে ঢাকায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চাঁদপুরে আসলে থানায় অভিযোগ করা হবে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে কথা কাটাকাটির জের ধরে এই ঘটনা ঘটে। আহতরা চাঁদপুর ও ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওসি আরও জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধা জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত হামলায় জড়িতরা গ্রেফতার না হবেন, ততোক্ষণ পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য এই মার্কেটের ৫ শতাধিক দোকানপাট বন্ধ থাকবে। এ দিকে, এমন পরিস্থিতিতে সেখানে নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানান, যেকোনো মূল্যে ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তবে এরইমধ্যে হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।