শুক্রবার , মে ১৭ ২০২৪

রাতের বাড়ি গিয়ে ঈদ উপহার পৌঁছালো “গ্রীন ভয়েস” চবি  ও চাঁদপুর জেলা শাখা

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশে দেশে চলছে লকডাউন। ফলে বাংলাদেশের ঘর থেকে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষজন। কাজ-কর্ম বন্ধ থাকায় অসহায়ত্ব জীবন-যাপন করছে এসব মানুষ। একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে জীবন। এই দুইয়ের মাঝে পড়ে সবচেয়ে বিপাকে রয়েছেন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন। তাঁরা না পারেন কাজে যেতে, না পারেন কারো কাছে হাত পাততে। এসব অসহায় মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন “গ্রীন ভয়েস”।
সরকারি নির্দেশনা মেনে নিজ অর্থায়নে অসহায় মানুষদের খুঁজে খুঁজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন গ্রীন ভয়েসের সবুজ বন্ধুরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ভালোবাসার টানে নিস্বার্থভাবে এসব কাজ করছেন তাঁরা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের ৩১টি জেলায় ১২ শতাধিক পরিবারের মাঝে তৃতীয় দফায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। গতকাল (বুধবার)    চাঁদপুর জেলার হাইমচর ও ফরিদগঞ্জ  উপজেলায় ১০টি পরিবারকে বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাদের ৪র্থ  দফায় খাদ্যসামগ্রী ও ঈদ উপহার  বিতরণ। এই  দফায়  সেসকল প্রবাসীদের পরিবার কে সহায়তা করা হয়েছে যাদের বৈদেশিক মুদ্রায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল ছিল। প্রবাসীদের পরিবারে  সাথে কথা বলে জানা যায়, বিদেশে কাজ বন্ধ থাকায়  তাদের আয় উপার্জন বন্ধ, তাই নিজেদের  চলতে সমস্যা হচ্ছে। তাই দেশে টাকা পাঠাতে পারেন নাই।এই  অবস্থায় গ্রামে পরিবার
খুব কষ্টে দিন পার করছে। তারা কারো কাছে  কিছু  চাইতে পারে নাই। এই অবস্থায় রাতের অন্ধকারে তাদের ঘরে খাবার  নিয়ে   যায়  গ্রীন ভয়েস চাঁদপুর জেলার সমন্বয়ক মুহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম।
গ্রীন ভয়েস চাঁদপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক মুহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম  বলেন, যখন খাবার নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে যাই তখন তাদের মুখের হাসি দেখে নিজেকে ধন্য মনে হয় এবং সেই সাথে সব কষ্ট ভুলে যাই। মনের মাঝে “গ্রীন ভয়েস” এর প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায়, ইচ্ছে হয় এভাবে যেন সারাজীবন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারি।
ফারুকুল ইসলাম  আরও জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে যখন ত্রাণ তুলে দিচ্ছিলাম তখন কেউ কেউ কেঁদে পর্যন্ত ফেলছিল। কতটা অসহায় হলে মানুষ কেঁদে ফেলে তা বলার ভাষা নেই আমার। ত্রাণ পেয়ে তারা বেশ খুশি হয়েছে। এই ভালোলাগার অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। ধন্যবাদ “গ্রীন ভয়েস”কে এমন মহৎ কাজের অংশীদার করার জন্য।
খাদ্য-সামগ্রী পেয়ে এক মহিলা বলেন, ভাইরাস আইসা কাজ-কাম সব বন্ধ হইয়া গেছে। ঘরে কোন খবর নাই, বাচ্চা-কাচ্চাদের কিভাবে খাওয়ামু সেই টাকাও নাই,আপনারা খাবার দিয়ে গেলেন খুব উপকার হইল, আল্লাহ আফনেগরে ভালো করুক।
“গ্রীন ভয়েস”র প্রধান সমন্বয়ক আলমগীর কবির জানান, গ্রীন ভয়েস শুধু একটি পরিবেশবাদী যুব সংগঠনই নয়। পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করি যেকোন দূর্যোগ বা মহামারী পরিস্থিতে অসহায়-গরীব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে দেশজুড়ে চলা লকডাউনে আঁটকে পড়া অসহায় মানুষদের ঘরে গ্রীন ভয়েস এর পক্ষ থেকে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছি।
তিনি বলেন,মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খাদ্য। খাবার না খেয়ে কোন জীবকুলের পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব না। সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে চাই সুষম ও পর্যাপ্ত খাবার। এসব মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারার মধ্যে স্বার্থকতা খুজে পাই। সমাজের কিছু বিত্তবান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এখন পর্যন্ত সারাদেশের ৩১ জেলায় ১২০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।—স্টাফ রিপোর্টার /