………….নিয়ন্ত্রনহীন শাসন ব্যবস্থাসাথে…… ………………….চাল ডাল খিচুড়ী…………………


🇧🇩 দেশটি যখন স্বাধীন, নিশ্চয় আমাদের পতাকা আছে। মানচিত্র আছে। শক্তিশালী জনগোষ্ঠী আছে। আছে ধর্মীয় মূল্যবোধের শক্তি। আরে ভাই সরকারও আছে। রাষ্ট্র ও জনগণের মৌলিক চাহিদার প্রয়োজনে আছে অর্থনীতি, খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান ইত্যাদি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বানাতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটও আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিশ্চয় আমাদের সব ঠিক আছে ❓ যেমনঃ-
অর্থনীতিঃ❗ অর্থের উপর শাসকদের নীতির যথার্ত ব্যবহারই মূলত দেশের অর্থনীতি। অর্থের সময়োপযোগী ও নির্দিষ্ট ব্যবহারই হচ্ছে
শক্তিশালী রাষ্ট্র নির্মাণের চাবিকাঠি। দেশের উন্নয়নমুলক কাজের জন্য নির্দিষ্ট আয়-ব্যয়ের হিসেব চুড়ান্ত ভাবে মিলিয়ে নেয়া অর্থমন্ত্রনালয় অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তাদের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ রাষ্ট্রের ভূল পথে অর্থের অপচয় উন্নয়ন ও দেশের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে আনে।

ইতিমধ্যে আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি মগবাজার ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজে বাজেটের চার গুণ বেশি খরচ হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের কিছু কিছু উন্নয়নেও হঠাৎ কাজের ব্যয় আকাশ ছু্ঁয়ে যায়। পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় কোটির সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে হয়তো। কিন্তু দেশে বণ্যা, দূর্যোগ হলে ব্যয় তো লাগামহীন হিসেব মিলাতে থাকে।

কিন্তু মজার বিষয় হলো সম্প্রতি করোনার সংকট মোকাবেলায় সরকারের ত্রান জালিয়াতি, রেশনিং কার্ড এবং চলমান কর্মহীনদের মাঝে তিন মাস আর্থিক সহায়তা বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদি মোবাইল মাধ্যমে দিতে শুরু করেছেন। প্রথমে বেরিয়ে আসলো থলের বিড়াল এ তালিকায় ৪১ বার ইউপি সদস্যদের ফোন নাম্বার দেয়া হয়েছে। ছিল পরিবারের সদস্যদের নাম ও ফোন নাম্বার। (গত ১৬ মে গণ মাধ্যমের শিরোনাম) একই নাম্বারে টাকাও চলে গেছে একাধিক বার। যার ফলে সরকার আট লাখ মোবাইল নাম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন । তাহলে সত্যিই কি দেশ সঠিক ভাবে পরিচালিত হচ্ছে? অর্থের ব্যবহার হচ্ছে সঠিক নিয়মে। যাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রান, নগদ অর্থ তারা পাচ্ছেন তো? অপেক্ষায় থাকুন দুর্নীতি ও অর্থনীতির ঢালকাটা চমক পেতে।

খাদ্যঃ❗মানুষের বেঁচে থাকা ও জীবন, জীবিকার প্রধান মৌলিক চাহিদা খাদ্য। ভাত,মাছ, মাংস, শাক-সবজি, ডিম, ফলমূল ইত্যাদি। এসব খাদ্যের রূপকার কৃষক। উৎপত্তিস্থল উর্বর মাটি। কৃষকে ঘাম ঝরানো শ্রমে যখন জনগণের নুখে অণ্য আসে তখন কৃষক হয়ে যায় অণ্যহীন। এর মুল অভাব কৃষকের উপর শাসকের অদৃষ্টি এবং এক শ্রেনী মুনাফাভোগীর নিরব আঘাত। আমরা কখনও কৃষকের উপর ভালবাসা, সততা ও ন্যায়ের হাত বাড়িয়ে দিতে পারিনি। শুধু শোষনের ভাগই নিয়েছি। যারা আমাদের মুখের অণ্যের জন্য মাঠে রোদ-বৃষ্টিতে যুদ্ধ করে সোনার ফসল ফলায় আজ তাদেরও আমরা অনাহারে রেখেছি। শুধু কি তাই আজ দেখুন করোনা ভয়াবহ আঘাত কতটা ক্ষুধার জ্বালা বাড়িয়েছে। পুরো দেশে খাদ্যভাব। নিয়ন্ত্রনহীন শাসন ব্যবস্থার নগ্ন আঘাত এখন কৃষক,শ্রমিক, জেলে,তাঁতী, চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ী সকলের মাঝে। এটাই শতাব্দীর সেরা ইতিহাস। খাদ্য ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। যদিও শাসক খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যর্থ হয়েছে।

শিক্ষাঃ❓শিক্ষা যখন জাতি ও রাষ্ট্রের মেরুদন্ড তখন জাতি হবে নীতি ও সৎ মনুষ্যত্বের পুজারি। রাষ্ট্র পাবে গর্বিত জাতি গোষ্ঠী। কিন্তু আফসোস বাংলার অধিক মনুষ্যত্বহীন মানুষ ফল আসার আগেই ফুল ছিঁড়ে পেলে দেয়। যার ফলে শিক্ষা খাতে দুর্নীতির ভয়াবহতা অন্য সব কিছুকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে রয়েছে ভর্তি বানিজ্য, পাঠ্য বানিজ্য, চাকুরী বানিজ্য। ঘুষ বানিজ্যে চাকুরীতে আসা সরকারি কর্মচারী প্রথমে জড়িত হন দুর্নীতিতে। সরকারকে পেলে দেন বিপদগামী পথে। এতেই সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাধাঁ গ্রস্ত হয়।

চিকিৎসাঃ ❓ চিকিৎসা জনগণের প্রধান মৌলিক অধিকার। চিকিৎসা খাত যতই উন্নত হবে দেশের আর্থিক সফল্য উচ্চ পর্যায়ে পৌছে যাবে। মানুষের আয়ু বৃদ্ধি পাবে। মানদন্ড চিকিৎসা সেবা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। কিন্তু এটা কি করে সম্ভব বাংলাদেশে? যেখানে হাসপাতালে লাশের উপর ট্যাক্স বসানো হয়। চিকিৎসা খাতে বড় বড় দুর্নীতি হয়। রোগীরা যখন দালাল বা ডাক্তারের কাছে জিম্মি থাকে তখন চিকিৎসার ব্যয় সাধারন মানুষের উপর মৃত্যু ডেকে আনে। হাসপাতাল গুলো রোগীর উপর চালায় চিকিৎসার নামে বানিজ্য। জাতির প্রশ্ন বর্তমানে করোনার মহামারিতে হাসপাতালে গুলোতে চিকিৎসা হচ্ছে তো? তাহলে ভাবুন আপনার, আমার এবং দেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে? অপেক্ষায় থাকুন মৃত্যুর মিছিলের!

বাসস্থানঃ❗প্রতিটি মানুষের মৌলিক চাহিদার আরেক নাম বাসস্থান। মানুষ মানেই নিজের মাথার উপর একখানা ছায়া তৈরির কারিগর। হোক তাল পাতার ঘর, ছন বা কু্ড়েঁ ঘর, টিন বা পাকা দালান। কেউ তো বাইরে থাকে না? কিন্তু আফসোস আজব এক বাংলাদেশ কারো রাজ প্রসাধ, অট্রালিকা, একাধিক বাড়ী গাড়ী। কারো বিছানা রাতের ফুটপাতে। কেউ খেয়ে কেউ বা না খেয়ে। এভাবে জীবন কাটে দেশের প্রায় ৩৫/৪০ লাখ পরিবারের। এটাই কি ছিল স্বাধীনতার অঙ্গিকার? তোমরা থাকো সাত তলায় গরীব থাকবে গাছ তলায়?

তবে এদেশে চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যতই দুর্নীতি বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন তখনি চোর-ডাকাতের উৎপাত বাড়তে থাকে। প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণের কথা বললে উত্তর থেকে শোষণ আর দুর্নীতির আওয়াজ আসে। সত্যিই মনের অজান্তে হাজারও প্রশ্ন জাগে কে চালাচ্ছে দেশ? কে বা সরকার? কারাই বা জনগণ। নাকি নিয়ন্ত্রনহীন শাসন ব্যবস্থা ডাল,চালে খিচুড়ি রান্নার গল্পের মতই চলছে?
তবুও প্রত্যাশার বাতি জ্বলুক সকলের মনে। নীতি আর দেশপ্রম জাগো জনে জনে।

—লেখকঃ হুমায়ুন কবির বেপারী, নির্বাহী সম্পাদক সাপ্তাহিক সাদা কাগজ