নাগালের বাইরে ভোজ্য তেল চাল, পেয়াজ ও মুরগির দাম বেড়েছে

চাঁদপুর দিগন্ত রিপোর্ট

দফায় দফায় দাম বৃদ্ধি পেয়ে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ভোজ্য তেলের দাম। অতিপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দামের লাগাম টানা যাচ্ছে না কোনভাবেই। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে।

বর্তমানে বাজারে খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১২৫ থেকে ১৪০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে চাল ও মুরগির, পেয়াঁজ ও রসুনের দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিম, সবজি, আলু এবং গরু ও খাসির গোশতসহ অন্যান্য পণ্যের দাম।

চাঁদপুর শহরের পালবাজার, বিপনীবাগ ও নতুন বাজারে দেখা যায়, গত দুই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সয়াবিনের দাম। এক লিটার রূপচাঁদা বোতলজাত সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এখন ১৪০ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে ফ্রেশ ও তীর ব্র্যান্ডের এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের এমআরপি এখন ১৩৫ টাকা এবং পুষ্টি ও বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের দাম এখন ১৩০ টাকা।

পাঁচ লিটারের বোতলের গায়ে লেখা রয়েছে রূপচাঁদার তেলের দাম ৬৮৫, ফ্রেশ, তীর ও পুষ্টির দাম ৬৫৫ এবং বসুন্ধরার দাম ৬৫০ টাকা। তবে ক্রেতারা এর চেয়ে একটু কম দামে কেনেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু বোতলজাত সয়াবিন তেলই নয়, খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও ব্যাপক চড়া। কাওরান বাজারে ১১৫-১২৫ টাকা লিটারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। আর পাম তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১১০-১১৫ টাকা দরে।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত বছরের এ সময়ের তুলনায় সয়াবিন তেলের দাম এখন ১৯-২৬ শতাংশ বেশি। আর দুই মাস পরেই রমজান। বিষয়টি মাথায় রেখে বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।

গত শুক্রবার চাঁদপুর বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, শালগম বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়, গাজর ৩০ টাকায়, শিম ২০-৩০ টাকায়, বেগুন ৩০ টাকায়, করলা ৪০-৫০ টাকায়, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, পাকা টমেটো ৩০ টাকায়, কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ২৫ টাকায়, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি পিস লাউ আকার ভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকায়, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ২০ টাকা, আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে।

হালিতে ৫ টাকা কমে কলা ১৫ থেকে ২০ টাকায়, জালি কুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আদা প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, রসুনের কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়। প্রতি কেজি বি আর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়, মিনিকেট ৬৫ থেকে ৬৬ টাকায়, নাজির ৬৫-৬৮ টাকায়, পোলাওয়ের চাল ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ডিমের দাম ৫ টাকা কমে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। দাম বেড়ে সোনালী মুরগি (কক) ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় ও ব্রয়লার ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাঁদপুর বাজারগুলোতে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির গোশত এবং মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের দাম।

বাজারে প্রতি কেজি খাসির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, বকরির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, গরুর গোশত ৫৫০ টাকায়, মহিষ ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাঁদপুর মাছের বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকার ভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মাগুর মাছ ৬০০ টাকা, প্রতি এক কেজি শিং মাছ (আকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, মৃগেল ১১০ থেকে ১৫০ টাকায়, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়, ইলিশ প্রতি কেজি (আকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ১০০০ টাকা,

চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকায়, ফোলি মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, পোয়া মাছ ২০ আগের ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, পাবদা মাছ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়, টেংরা মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, টাটকিনি মাছ ১০০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৪০ টাকায়, সিলভার কার্প ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়, দেশি কৈ ১৫০ থেকে ৭০০ টাকায়,

কাঁচকি ও মলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, আইড় মাছ ৫০০, রিঠা মাছ ২২০ ও কোরাল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়, ছোট বেলে ১২০, রূপচাঁদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।