দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে -ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী কোন গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয় বরং গণমানুষের জন্য কল্যাণকামী একটি নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক দল। জামায়াত জাতির যেকোন দুর্যোগকালীন মুহূর্তে দুর্গত ও বিপদাপন্ন মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের কল্যাণে সাধ্যমত কাজ করেছে।

সে ধারাবাহিকতায় আজ আমরা অগ্নিদুর্গতদের সাথে সহমর্মীতা জানানোর জন্য এসেছি। আর্ত-মানবাতর সেবায় জামায়াতের এই কল্যাণকামীতা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে-ইনশা আল্লাহ। তিনি অগ্নিদুর্গতদের দুর্দশা লাঘবে সরকার, সমাজের বিত্তবান মানুষসহ সকল স্তরের দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আশার আহবান জানান।

সোমবার রাজধানীর রূপনগরে চলন্তিকা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আর্থিক সাহায্য বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, রূপনগর থানা আমীর নাসির উদ্দীন ও সেক্রেটারি আবু হানিফ প্রমুখ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গণমানুষের সকল সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু দেশে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকায় নাগরিকরা রাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত থাকলে মানুষের যা প্রয়োজন তা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হতো। লাইনে দাঁড়িয়ে সাহায্যের জন্য মানুষের কাছে হাত পাততে হতো না। আর মানুষ হয়ে মানুষের কাছে হাত পাতা মানবতারই অপমান। মূলত রাষ্ট্রের অভাব ব্যক্তি বা সাংগঠনিক পর্যায়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। আমাদের সাধ অনেক হলেও সাধ্য খুবই সীমিত। আর আমরা সীমিত সামর্থ নিয়েই আর্ত-মানবতার সেবাই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তাহলেই মানুষের সকল সমস্যার সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা যেকোন ধরনের দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখতে চাই। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অগ্নিদুর্ঘটনার প্রকোপ যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা সত্যিই রহস্যজনক। বিগত দিনে নিমতলী ও চকবাজার সহ দেশের ভয়াবহতম অগ্নিকান্ডগুলো নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিগুলো ইতিবাচক কোন ফল বয়ে আনেনি। দেশে অগ্নিদুর্ঘটনার প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কোন পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় অতি তুচ্ছ ঘটনায় অবহেলা ও উদাসীনতার কারণেই জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যা সত্যিই দুঃখজনক।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে দাবি করা হলেও অগ্নিনির্বাপনে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আমাদের হাতে নেই। তাই যেকোন অগ্নিদুর্ঘটনায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। অগ্নিনির্বাপনসহ যেকোন দুর্যোগে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ও সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব। তিনি ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ, সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীনদের যথাযথ ক্ষতিপূরুণসহ সম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে পূনর্বাসন, আহতদের সুচিকিৎসাসহ অর্থিক সাহায্য এবং ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং সংগঠনের নেতাকর্মীদের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের দুর্দশা লাঘবে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসার আহবান জানান। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।