চাঁদপুরে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন: ৩ লঞ্চ কর্মচারী আটক,নদী বন্দর কর্মকর্তা বরখাস্ত

টানা দুই মাসেরও বেশি সময় পর রোববার (৩১ মে) থেকে চাঁদপুরের সাথে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারী করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাককে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় এমভি সোনার তরী লঞ্চ চাঁদপুর নৌ-টার্মিনাল থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

তবে শুরুর দিনেই সরকারি নিয়ম-নীতি ও স্বাস্থ্য মানছে না লঞ্চগুলো। এমভি রফরফ লঞ্চ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যাত্রীদের লঞ্চে উঠানো এবং বাড়তি টিকেট বিক্রি করে। এ জন্য লঞ্চটির ৩জন স্টাফকে আটক করে পুলিশ। পরে সতর্ক করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউনের ফলে ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে চাঁদপুরের লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

রোববার সরেজিমন লঞ্চঘাটে যেয়ে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রাখার কথা থাকলেও মানা হয়নি তা। অনেক যাত্রীর মুখে মাস্ক ছিল না।

তাছাড়া লঞ্চকর্তৃপক্ষের নিকট থেকেও দেখা যায়নি বিশেষ কোন ব্যবস্থা। লঞ্চগুলোতে হ্যান্ড স্যানেটাইজারের ব্যবস্থা বা জীবানুনাসক দ্রব্য স্প্রে করতে দেখা যায়নি। অতীতের সময়ের মত তারা স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রী পরিবহন করছে।

কোন ধরনের নিয়মনীতি না মেনেই যাত্রীরা লঞ্চে যাত্রা করছেন। বিশেষ করে আশপাশের চরাঞ্চল থেকে নৌকায় করেও যাত্রীদের লঞ্চঘাটে আসতে দেখা যায়।

লঞ্চযাত্রী মুক্তার হোসেন ও তারেক হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ থেকে চঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। আমাদের অফিসের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আমরা ঢাকা যাচ্ছি। কিন্তু করোনা সংক্রমণরোধে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে তেমন কোন ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। অনেক যাত্রীর মুখে মাস্কও পড়া নেই। এভাবে ঢালাও ভাবে লঞ্চ চলাচল করতে সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা বন্দর কর্মকর্তা আ. রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় পর আজ থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। ঘাটে চঞ্চের সংখ্যা কিছুটা কম থাকায় লঞ্চ ছাড়ার সময় সূচি সঠিকভাবে মানা যায়নি। তবে আগামীকাল থেকে লঞ্চের সূচি মেনে চলাচল করবে।

যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, নিজেদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাতায়াত করার অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি লঞ্চগুলো যেন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। কোন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অতিরি যাত্রী নেওয়ার চেষ্টা করতে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন নৌরুটে প্রায় অর্ধশত লঞ্চ চলাচল করে থাকে। নিরাপদ, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী হওয়ায় চাঁদপুর হয়ে আশপাশের অনেক মানুষ লঞ্চে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন।

চাঁদপুর নদী বন্দর কর্মকর্তা বরখাস্ত

বৈশ্বিক মহামারী করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি সহ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের স্ক্রলে তার বরখাস্তের খবর প্রচারিত হচ্ছে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান জানান, নদী বন্দর কর্মকর্তার বরখাস্তের খবর আমিও টেলিভিশন চ্যানেলে দেখেছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো পত্র পাইনি।

৬৬টি দিন পর আজ সকালে চাঁদপুর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। কিন্তু প্রথম দিনেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠে নদীবন্দর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

শুরুর দিনেই সরকারি নিয়ম-নীতি ও স্বাস্থ্যবিধি
মানছে না লঞ্চগুলো। এমভি রফরফ লঞ্চ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যাত্রীদের লঞ্চে উঠানো এবং বাড়তি টিকেট বিক্রি করে। এ জন্য লঞ্চটির ৩ জন স্টাফকে আটক করে পুলিশ। পরে সতর্ক করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক, বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করার বিষয়ে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে একটি ট্যানেল স্থাপন করার কথা ছিল। কিন্তু ঢাকা থেকে তা সরবরাহ না হওয়ায় আপাতত যাত্রী সুরক্ষায় আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।

—চাঁদপুর দিগন্ত রিপোর্ট