চাঁদপুরে করোনা উপসর্গে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ১০ জনের মৃত্যু

চাঁদপুর দিগন্ত রিপোর্ট

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চাঁদপুর সদর, মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জে করোনার উপসর্গে (জ্বর, শ্বাসকষ্ট) আরো ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
চাঁদপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নের বড় সুন্দর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মাহবুবুল হক (৬০) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। শুক্রবার সকালে তার নমুনা (স্যাম্পল) সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়েছে তাকে।
এদিকে হাজীগঞ্জ পৌর যুবদলের সাবেক আহবায়ক আবদুল আউয়াল সর্দার শুক্রবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের সময় জ্বর ও শ্বাসকষ্টে মারা যান। তিনি হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ সর্দার বাড়ির বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তার করোনা নমুনা সংগ্রহ করা হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। তিনি হাজীগঞ্জ বাজারের একজন বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী ছিলেন। জানা গেছে, করোনা আসার আগে থেকেই তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।উপসর্গ নিয়ে বাকিলায় মিথিলা নামে এক স্কুল ছাত্রী করোনায় মারা গেছে। সে বাকিলার মোবাশ্বের আলমের মেয়ে। বৃহস্পতিবার বিকালে হাজীগঞ্জ মাদ্দাখাঁ (র.) মসজিদের সহকারি ইমাম হাফেজ সামছুদ্দোহা মারা যায়।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সোয়েব আহমেদ চিসতী। অন্যদিকে মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী দক্ষিণ ইউনিয়নে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তার নাম আব্দুল কুদ্দুছ (৫৫)। স্থানীয়রা জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিনি মারা গেছেন। রাতেই তার দাফন হয়েছে।

চাঁদপুরের করোনা উপসর্গ নিয়ে ১২ ঘন্টার ব্যবধানে ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছে।

রাতে সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যান্দি ইউনিয়নের ১ জন মারা গেছেন। তার নাম আব্দুর রাজ্জাক (৭০), তিনি ভর্তি হয়েছে গত রাতে। অন্যজন লাকী বেগম (৩৪), কল্যান্দী। তিনি ভর্তি হয়েছে সকালে। সকালেই মারা গেছেন।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বলিয়া গ্রামে মজিবুর রহমান নামে (৭০) বছরের এক বৃদ্ধা বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় মারা যায়। একই গ্রামের হাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (৬০) রাতে মারা যায়।
বুধবার রাত আড়াই টায় চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে চাঁদপুরের সদরের বাগাদী ইউনিয়নের আবু তাহের ভূইয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে নিহত হয়।
পারিবারিক ও হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়, হাজীগঞ্জের বলিয়া গ্রামের নিহত মজিবুর রহমানের ছেলে মনির হোসেন মুঠো ফোনে জানান, আমার বাবা কয়েকদিন দিন ধরে জ¦র, সর্দি, কাশিসহ আরো নানান রোগে ভূগছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় নিহত হয়।
এলাকার কোন লোকই আমাদের সহযোগিতা করেনি বরং সবাই পালিয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফাজাল স্যারের সাথে যোগাযোগ করি। স্যার নিজেই এসে উপজেলা দাফন কাফন কমিটির সহযোগিায় বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় দাফন সম্পন্ন করি।
অপর দিকে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় নিহত একই গ্রামের বাসিন্দা হাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (৬০)কেও দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফজাল হোসেন জানান, হাজীগঞ্জের বলিয়ায় নিহত মজিবুর রহমানের মৃতদেহ রাতে বাড়ীতে পড়ে থাকলেও এলাকার কোন জনপ্রতিনিধি এগিয়ে আসেনি। ভোরে আমি নিজে গিয়ে তাদেরকে ফোন করি তবুও তারা আসেনি। পরবর্তীতে রিপোর্ট করার কথা বললে তারা এগিয়ে আসে।
তিনি বলেন, যারা মৃত্যুবরণ করেন, তাদের দাফন কাপনে এগিয়ে আসা সামাজিকভাবে সবার কর্তব্য। অবহেলা করে দূরে থাকা অন্যদেরকে দাফন কাপনে আসতে বারণ করা এটা সমাজের প্রতি একটি অনিহা। এদেরকে সামাজিকভাবে চিহ্নিত করতে হবে।
বুধবার রাত সাড়ে ২টা ৪০ মিনিটে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে করোনা উপসর্গে নিহত চাঁদপুরের সদরের ইউনিয়নের বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম বাগাদী গ্রামের ভূইয়া বাড়ীল নিহত আবু তাহের ভূইয়া (৬০)। এর দাফন সকালে দাফন সম্পন্ন করেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়, বুধবারই শ্বাস কষ্ট নিয়ে আবু তাহের সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। রাতেই মৃত্যুবরণ করেন।