ইলিশে সরগরম চাঁদপুরের মাছঘাট

দিগন্ত রিপোর্ট

ভরা মৌসুম চললেও চাঁদপুরের মেঘনা ও পদ্মা নদীতে আশানুরূপ রূপালী ইলিশ পা”েছন না জেলেরা। তবে সাগরপাড়ের উপকূলীয় অঞ্চলে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় ওই অঞ্চলের ইলিশে ভরপুর চাঁদপুরের মাছঘাট। প্রতিদিনই বাড়ছে এখানে ইলিশের আমদানি। গড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মণ ইলিশ ঘাটে আমদানি হ”েছ। এসব ইলিশ হাত বদল হয়ে ট্রেন ও ট্রাকে করে চলে যা”েছ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোসহ দেশের বিভিন্ন ¯’ানে।

বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ফিশিং বোটে করে এসব ইলিশ আনা হ”েছ চাঁদপুর ঘাটে। এছাড়া সড়ক ও নদী পথে ব্যাপারীরা সাগর ও উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের কাছ থেকে ইলিশ মাছ কিনে ভালো দাম পাওয়ার আশায় চাঁদপুর নিয়ে আসছেন। তবে এখানকার অনেক আড়তদারের দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের কাছে দাদন রয়েছে। যে পরিমাণ মাছ এখন ঘাটে আসছে তার সিংহভাগ দাদনের মাছ বলে জানিয়েছেন ¯’ানীয় মৎস্য আড়তদাররা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আড়তদার, ব্যাপারীসহ এ কাজে জড়িত শ্রমিক কর্মচারী, মহাজনসহ সবাই ব্যস্ত। কারোরই দম ফেলার সময় নেই। চিৎকার-চেঁচামেচি আর ইলিশ আমদানি ও সরবরাহে সরগরম চাঁদপুর মাছঘাট। ইলিশের দাম প্রতিমণ সর্বনিম্ন ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা। তবে আড়তে আকারভেদে সর্বো”চ ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় ইলিশ পাইকারি বিক্রি হ”েছ।

অন্যদিকে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা মণ দরে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হ”েছ। দুই থেকে তিনটা ইলিশে এক কেজি হয় এমন আকারের ইলিশের কেজি ৩৫০ টাকা। আর ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হ”েছ। ১ কেজি সাইজের ইলিশের দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা বিক্রি হ”েছ। এক কেজির চেয়ে ওজনে বেশি হলে দাম আরও বেশি।

কিš‘ প্রশ্ন হলো এসব ইলিশ দক্ষিণাঞ্চল থেকে বরফ দিয়ে আনতে গিয়ে দু-তিনদিন সময় লাগে। এতে ইলিশ অনেকটা নরম হয়ে যায়। অভিযোগ আছে, এই নরম রোধ করতে দেয়া হয় লবণ। তারপরে বিক্রির ব্যব¯’া নেয়া হয়। তবে ব্যবসায়ীরা এই কথা অস্বীকার করেছে।
এদিকে ¯’ানীয় বাজারে লোকাল নদীর মাছের দাম কমেনি। এখনো লোকাল নদীর মাছের কেজি হাজার ১৪০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হ”েছ।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া জানান, ঘাটে যে মাছ আসছে, তার অধিকাংশই চাঁদপুরের বাইরের মাছ। দক্ষিণাঞ্চলের শশীগঞ্জ, পাথরঘাটা, মহিপুর, লেতরা ও হাতিয়ার গভীর সাগরের মাছ। আমদানিকৃত এসব ইলিশ এখানে থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যা”েছ। চাঁদপুর মাছঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার ইলিশ বিভিন্ন অঞ্চলে যা”েছ ।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. শবেবরাত সরকার বলেন, লোকাল নদীর মাছ নেই। বৃহত্তর বরিশাল, নোয়াখালীর হাতিয়া, লক্ষ্মীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে মাছ ধরা পড়ছে। আশা করছি নদীগুলো সামনে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত মাছে ভরপুর থাকবে। চাঁদপুর ঘাটে এখন যেসব মাছ আসছে, সব মাছ ভোলার লালমোহন, চরফ্যাশন, ঢালচর, সামরাজ, মহিপুর ও হাতিয়া এলাকার।