বৃহস্পতিবার , জানুয়ারি ১৬ ২০২৫
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন চাঁবিপ্রবি ভিসি ড. পেয়ার আহমেদ

সকলের পরামর্শের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে : চাঁবিপ্রবি উপাচার্য

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চাঁবিপ্রবি) এর বর্তমান সমস্যাসমূহ অবহিতকরণ এবং ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার ১৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভবন-২ এর সেমিনার কক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় অংশগ্রহণ করেন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকরা।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. পেয়ার আহম্মেদ। তিনি বলেন, আমি নিজে স্বচ্ছ থাকলে বিগত দিনের মত কোন সমস্যা তৈরী হবে না। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি বিগত দিনেরমত কোন ধরণের সমস্যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরী হবে না। সকলের ঐক্যমতে এবং পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামগত উন্নয়ন হবে। ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল নিয়োগ একাডেমিক অন্যান্য সমস্যা সমাধান হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিগত দিনে গণমাধ্যম ভূমিকা ছিলো এবং আগামীতে থাকবে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও গনমাধ্যমসহ আমরা আগামীতে সব ধরণের প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবো। ইতোমধ্যে থমকে থাকা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাথে কথা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. শওকত আলী।

সভার সঞ্চালনায় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের প্রভাষক সুস্মিতা কর। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ তুলে ধরে বক্তব্য দেন ব্যাবসা শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মো. বায়েজিদ আআহমেদ রনি।

সাংবাদিকদের মধ্যে প্রস্তাব ও পরামর্শমূলক বক্তব্য দেন গিয়াস উদ্দিন মিলন, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্র ধর, আল-ইমরান শোভন, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন লিটন, আলম পলাশ, ফারুক আহম্মেদ, রিয়াদ ফেরদৌস, কাদের পলাশ, মুহাম্মদ ইলিয়াছ পাটওয়ারী, বোরহান উদ্দিন ঢালিম, জাকির হোসেন, ইব্রাহীম রণি, তালহা জুবায়ের, মো. ফরিদুল ইসলাম উকিল, সেলিম রেজা,  সালাহ উদ্দিন, সাইদ হোসেন অপু  প্রমূখ।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পারে জন্য ভূমি অধিগ্রহণ এবং বিগত দিনে ভূমি অধিগ্রহণে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও জটিলতার বিষয়ে আলোচনায় উঠে আসে। বালু খেকো সেলিম চেয়ারম্যানসহ একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট করার জন্য এই বিশ^বিদ্যালয় দেশজুড়ে আলোচিত ও সমালোচিত হয়। যার কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ তৈরী করে দেয়ার লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রদক্ষেপ গ্রহণ করতে পরামর্শদেন সাংবাদিকরা।

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নিম্নোক্ত অতীব জরুরি বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রীদের জন্য পৃথক অস্থায়ী হল ভাড়া গ্রহণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন বর্ধিতকরণের নিমিত্ত ভবন ভাড়াকরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্যান্টিন স্থাপন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ল্যাব স্থাপন এবং লাইব্রেরি বর্ধিতকরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ সেল গঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের IQAC Cell গঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ক্ষেত্রে অনুদান এবং শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ। চাঁদপুরে উপাচার্য মহোদয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে উপাচার্যের বাসস্থান সুবিধাজনক জায়গায় ভাড়াকরণ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার সুবিধার্থে ও উপাচার্য মহোদয়ের নিরাপত্তা বিধানের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিশ্চিতকরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে সামগ্রিক শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রক্টরিয়াল বডি গঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগ চালুকরণ ও অন্যান্য দপ্তর খোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগ/দপ্তরে জনবল নিয়োগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যানবাহন ক্রয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল সেন্টার চালুকরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসিসি, রোভার স্কাউট এবং রেড ক্রিসেন্ট চালুকরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য চাঁদপুর জেলা স্টেডিয়াম ভাড়াকরণ/ বরাদ্দকরণ।