চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা আজিজুর রহমান খান ভুট্টো হত্যা মামলায় অবশেষে এজহার নামীয় ৩জন আসামীকে আটক করেছে মডেল থানা পুলিশ ।
আটককৃত আসামীরা হলেন মনসুর খান (৩৮) পিতামৃত আ:লতিফ খান,মোস্তফা খান কালু (৪৮) পিতামৃত : শামছুল হক খান ,সুমন খান (৩৪) পিতা হান্নান খান সব সাং কুমারডুগী ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন চাঁদপুর সদর । আটককৃতদের আদালতে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ ।
১৯ মে দিবাগত রাতে মামলার তদন্তকারী কমকতা এসআই রাশেদের নেতৃত্বে মডেল থানার একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করতে সক্ষম হয় ।
মামলায় প্রধান আসামী সোহাগ খান পিতা: সিরাজ খানসহ ৫জনকে এজহারভুক্ত করা হয়েছে ।অজ্বাত আরো আসামী রয়েছে । মামলার বাদী হলেন নিহত আজিজুর রহমান খান ভুট্টোর স্ত্রী নিলীমা আক্তার রীনা । মামলা নং ১৬ তাং ১৯.৫.২০২০ ধারা ৩০২.৩৪ দ:বি: ।
মামলার তদন্তকারী কমকতা এসআই রাশেদ বুধবার সকালে জানান,এ মামলায় এজহার নামীয় ৩জন আসামীকে আটক করেছি । তাদেরকে জিজ্বাসাবাদ করা হবে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে । এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আপাতত সম্পতিগত বিরোধই এ হত্যাকান্ডের কারণ দেখা যাচ্ছে ।তারপরও আসামীদের রিমান্ডে আরো গুরুত্বপুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে । সেই সাথে প্রধান আসামী সোহাগ খানকে যে কোন মুহুতে গ্রেফতার করা হবে ।মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে । আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই কি কারণে ভুট্রো খানকে হত্যা করা হয়েছে তার মোটিভ বের করা সম্ভব হবে ।
জানা গেছে,পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান এর নিদেশে মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে পুলিশ । সেই সাথে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি নাসিম উদ্দিন মামলাটি মনিটরিং করছেন সাবক্ষনিকভাবে ।
জানা গেছে,গত সোমবার (১৮ মে ) রাত পৌনে ১১টায় বাড়ীতে যাওয়ার পথে ১০-১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান খান ভুট্টোর উপর হামলা চালিয়ে গলায় ও শরীরের বিভিন্নস্থানে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভুট্টোকে মৃত ঘোষনা করেন। মঙ্গলবার (১৯ মে) পৌনে ৪টায় ভুট্টোর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ডে ভুট্টোর প্রথম ও দ্বিতীয় জানাযা সম্পন্ন করে মরহুমের নিজ বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এদিকে কারা তার উপর হামলা করলো এবং কি কারণে করলো তা উৎঘাটনে চাঁদপুর জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থা কাজ শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, আজিজুর রহমান খান ভুট্টো রাত পৌনে ১১টার সময় বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির কাছেই ওঁত পেতে থাকা কয়েকজন যুবক ভুট্টোর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তার ডাক চিৎকারে স্থানীয় আজমির, অপি, ঝিকু ও মাইনুদ্দিন ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখেন ভুট্টোর চাচা সিরাজ খানের পুত্র সোহাগ খান ভুট্টোর গলায় ছুরি চালাচ্ছে। তাদের দেখে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন সোহাগসহ ওই সংঘবদ্ধ দলের সদস্যরা। কিন্তু খুনিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও তাদের রেখে যাওয়া ৪টি মোবাইল ফোন, রড, ছুরি ও ৫ জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়।
সামছুজ্জামান পাটওয়ারী আরো জানান, ভুট্টো পারিবারিকভাবে ৩ সন্তানের জনক। তার বড় ছেলে চাঁদপুর হাসান আলী হাই স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ে, দ্বিতীয় ছেলে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র এবং মেয়েটির বয়স মাত্র ৩ বছর।
তিনি আরো জানান, সম্পত্তিগতভাবে সোহাগসহ অন্যন্যদের সাথে ৪টি মামলা ছিলো। ৩টি মামলা ভুট্টোর পক্ষে রায় হয়ে আরেকটি মামলা চলমান আছে। ধারনা করা হচ্ছে সম্পত্তিগত বিরোধের জেড় ধরেই এ ঘটনা ঘটাতে পারে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান খান ভুট্টো কুমারডুগীস্থ এলাকায় সারের ব্যবসা করতো।
এ ব্যাপারে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান রাতে জানান, শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের আজিজুর রহমান ভুট্টো নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছে। কি কারণে হয়েছে এবং কারা করেছে পুলিশ প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি তদন্তেই সব বেরিয়ে আসবে।