মতলব দক্ষিণে সিঁধেল চুরির মহামারী দেখা দিয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে ২০ বসতঘরে দুর্ধর্ষ সিঁধ কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
সর্বশেষ গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে মতলব পৌরসভার নবকলস, নলুয়া ও মোবারকদী গ্রামের অন্তত ১০টি বাড়িতে সংঘবদ্ধ চোরের দল সনাতন পদ্ধতিতে সুরঙ্গ কেটে ঢুকে লুটে নিয়েছে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ কয়েক লক্ষাধিক টাকার মালামাল। একই সপ্তাহে বৃহস্পতিবারই বহরী ও নলুয়া গ্রামেও একই কায়দায় চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় পুরো এলাকা এখন আতঙ্কের গ্রাসে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের টহল ও নজরদারি না থাকায় চোরদের দাপট বেড়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, চোররা ‘সিঁধকাঠি’ নামের শাবলসদৃশ একটি অস্ত্র ব্যবহার করে মাটি খুঁড়ে সুরঙ্গ তৈরি করে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। নবকলস গ্রামের সুশীল বলেন, “আমার ঘরের দুই জায়গায় সুরঙ্গ করে ঢুকে মোবাইল ফোন আর কাপড়চোপড় নিয়ে গেছে। এমন ঘটনা বহু বছর ধরে দেখিনি।”
মোবারকদী গ্রামের লোকমান গাজী, আবুল হাসেম প্রধানীয়া, জয়দল গাজী ও মাস্টার বাড়ির খালেকসহ অন্তত ৮ জন একই রাতে চুরির শিকার হয়েছেন।
এলাকাবাসী কামাল উদ্দিন বিপ্লব বলেন, “এ ঘটনা পুরো গ্রামে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। নব্বইয়ের দশকের পর এত বড় সিঁধেল চুরির ঘটনা আর ঘটেনি।”
অনেকে অভিযোগ করেছেন, এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা গভীর রাত পর্যন্ত ঘোরাফেরা করে, আর এই চুরির সাথে তাদেরই সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এভাবে সিঁধ কেটে চুরি বহু বছর হয়নি। পুলিশের টহল বাড়াতে হবে, না হলে মানুষ নিজেরাই পাহারা বসাতে বাধ্য হবে।”
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ বলেন, “এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। টহল জোরদার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, এভাবে সিঁধ কেটে চুরি চলতে থাকলে গ্রামজুড়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে। তারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার, রাতের টহল ও নজরদারি বাড়ানো এবং মাদক ব্যবসায়ীদের দমন অভিযান চালানোর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।