স্টাফ রিপোর্টার
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ বছরও হচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। তবে গত বছরের মতো অটোপ্রমোশন না দিয়ে বাড়ির কাজের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
‘বাড়ির কাজের’ মাধ্যমে মূল্যায়নের বিষয়টি আগেভাগেই শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়া হবে। এটি কোন পদ্ধতিতে হবে তার সারসংক্ষেপ তৈরির কাজ শুরু করেছে মন্ত্রণালয়। পদ্ধতি নির্ধারণ করে খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে, সেখানে সায় মিললে জুলাই মাসের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহাম্মদ মনসুরুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় আপাতত বাড়ির কাজের দিকে আমরা বেশি মনযোগ দিচ্ছি। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা না নিতে পারলে বাড়ির কাজের মূল্যায়নের মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেয়া হবে। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আগেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, এবারের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষাও হবে না। একই রকম সিদ্ধান্ত হতে পারে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ব্যাপারেও। এ দুটিই অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা।
গত বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে পিএসসি, জেএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া যায়নি।
পিএসসি ও জেএসসি শিক্ষার্থীদের অটো প্রমোশন দেয়া হয়। আর এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ফলাফল দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষা না নেয়া হলেও ছাত্রছাত্রীদের শিখন ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আগে থেকেই টেলিভিশন ও বেতারে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরে গুগলমিটের মাধ্যমে শিক্ষকদের ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। ঘাটতি পূরণের পদক্ষেপে সর্বশেষ যুক্ত করা হয় ‘বাড়ির কাজ’। এ লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে ‘অন্তর্র্বতীকালীন পাঠপরিকল্পনা’।
তাতে বিষয়ভিত্তিক বাড়ির কাজ তৈরি করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা হিসাব করে শিক্ষকরা তা ফটোকপি করবেন। এরপর সপ্তাহে একদিন শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়ে আসবেন। শিক্ষার্থী অভিভাবকের সহায়তায় বাড়ির কাজ করে রাখবে। পরের সপ্তাহে গিয়ে তা সংগ্রহের পাশাপাশি নতুন কাজ দিয়ে আসবেন শিক্ষক। দ্বিতীয় সপ্তাহে গিয়ে সেটা সংগ্রহ করে আবার তৃতীয় সপ্তাহের বাড়ির কাজ দিয়ে আসবেন। এই পাঠ পরিকল্পনাটি তৈরি করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)।
অন্যদিকে জেএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নবেম্বরে নেয়া হয়। অন্য বছর এই সময়ে রেজিস্ট্রেশন, ফর্ম পূরণসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করা হয়। শুরু হয় প্রশ্নপত্র তৈরি ও মুদ্রণকাজ। এ বছর এসব নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা এখনও পাওয়া যায়নি। এতে বলা যায়, পরীক্ষাটি এবারও না হতে পারে। এ নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি বলতে কেবল রেজিস্ট্রেশন করে রাখা হয়েছে।