কার্যকর হয়েছে নতুন ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’। বহুল আলোচিত এই আইনটি প্রণয়নের এক বছরেরও বেশি সময় পর এটি বাস্তবায়ন শুরু হলো। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে এতদিন আইনটি বাস্তবায়নে যায়নি সরকার।
গত ২২ অক্টোবর আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে গেজেট জারি করে সরকার। নতুন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সড়কে আইন লঙ্ঘন করলে আজ থেকেই নতুন আইনে সাজা দেয়া হবে।
সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সড়কের নতুন আইনগুলো আমরা অনেকেই জানি না। আইন না মানলে হতে পারে জেল-জরিমানা।
আসুন জেনে নিই নতুন আইনের উল্লেখযোগ্য ১৪টি বিধান-
১. সড়কে গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হত্যা করলে ৩০২ অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
২. সড়কে প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালালে ও দুর্ঘটনা ঘটলে তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়
দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
৩. আদালত অর্থদণ্ডের সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে দেয়ার নির্দেশ দিতে পারবে।
৪. মোটরযান দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতর আহত বা প্রাণহানি হলে চালকের শাস্তি দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল
ও সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা।
৫. ড্রাইভিং লাইসেন্স গাড়ি চালানোর দায়ে ছয় মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হয়েছে।
৬. নিবন্ধন ছাড়া মোটরযান চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।
৭. ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার এবং প্রদর্শন করলে ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ
টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
৮. ফিটনেসবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হয়েছে।
৯. ট্রাফিক সংকেত মেনে না চললে এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
১০. সঠিক স্থানে মোটর যান পার্কিং না করলে বা নির্ধারিত স্থানে যাত্রী বা পণ্য ওঠানামা না করলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা
করা হবে
১১. গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বললে এক মাসের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা
হয়েছে।
১২. একজন চালক প্রতিবার আইন অমান্য করলে তার পয়েন্ট বিয়োগ হবে এবং একপর্যায়ে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে
১৩. গণপরিবহনে নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে অতিরিক্ত ভাড়া, দাবি বা আদায় করলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা
অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
১৪. আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সে পেতে হলে চালককে অষ্টম শ্রেণি পাস এবং চালকের সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস
হতে হবে। আগে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
১৫. গাড়ি চালানোর জন্য বয়স অন্তত ১৮ বছর হতে হবে। এই বিধান আগেও ছিল।
১৬. এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসলে এক মাসের কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।