অধ্যাপক মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ
ভূমিকাঃ নীতি ও নৈতিকতায় উৎকৃষ্ট ব্যক্তি,গোষ্ঠি, জাতি পৃথিবীতে সর্বোত্তম” এ বিষয়ে সবাই একমত । কিন্ত নীতি ও নৈতিকতার সঠিক পরিধি নির্ধারণে ও চিত্র প্রদর্শনে বিভিন্ন ধমর্, মতবাদ ও বুদ্ধি জীবিগণের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য ও দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। তাই নীতি ও নৈতিকতা নির্ধারণের সঠিক পন্থা উদঘাটন করার মাধ্যমে আলোচ্য বিষয়ের যথার্থ সংজ্ঞায়ন, সংশোধন ও বৈশিষ্ট্যাবলী প্রদর্শন সম্ভব ।
নীতি শব্দের অর্থ নিয়ম বা পদ্ধতিঃ প্রচলিত ইংরেজীতে বলা যায়, Moral (নীতি) justice পব (যথার্থ/ন্যায়)good behaviour (উৎকৃষ্ট আচরণ) Guidance (সঠিক পথ প্রদর্শন) অর্থাৎ কোন কাজ সম্পাদন করার নির্ধারিত প্রয়োজ্য পদ্ধতিকেই নীতি বলে অভিহিত করা হয় ।
নৈতিকতাঃ যে মৌলিক ধারণা, চিন্তা, বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নীতি প্রনয়ন করা হয়, সহজ অর্থে তাকেই নৈতিকতা বলা হয়। প্রচলিত ইংরেজতে Morality (নৈতিকতা)Righteousness (ন্যায়পরায়নতা) Goodness (উৎকৃষ্টতা) Riligiousity (ধামির্কতা) Obedience (কর্তব্য পরায়নতা) ইত্যাদি বুঝায়। অর্থাৎ যে উৎকৃষ্ট ও কল্যাণকর চিন্তা চেতনা, নীতি প্রনয়নে ভূমিকা পালন করে তাকেই নৈতিকতা বলা যেতে পারে।
নীতির উৎপত্তিঃ প্রকৃতপক্ষে মানবতার জন্যই নীতির উৎপত্তি হয়েছে। মানুষের সার্বিক শৃংখলা ও শান্তিপুর্ণ জীবন যাপনের প্রয়োজনে আমাদের সকল মানুষের ¯্রষ্টা তাঁর প্রেরিত নবী ও রাসুলদের মাধ্যমে সৃষ্টির শুভ সুচনাতেই নীতি পাঠিয়েছেন। যেমন প্রথম মানুষ হযরত আদম (আঃ) এর বাম পাজর হতে যখন হাওয়া (আঃ) কে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেন” আদম (আঃ) দেখেই তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সঙ্গীর সহিত মিলিত হতে চান। এহেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আদম (আঃ) কে বলেন একটু ধৈর্য ধরো, তাঁর সহিত তোমার বিবাহ সম্পন্ন করে দিচ্ছি। অতপর একটি সুন্দর নীতির মাধ্যমে আদম (আঃ) এর সহিত হাওয়া (আঃ) এর বিবাহ এবং হাওয়া (আঃ) এর সহিত ব্যাবহার বিধি, নম্রতা, ভদ্রতা, সহনশীলতা, সহমর্মিতা, প্রেম প্রীতি ভালবাসার বন্ধন সৃষ্টি করে দেন। সুখী জীবনের প্রয়োজনে সুষ্ঠু নীতিমালার এই শুভ সূচনাই মানুষকে প্রথম দিন থেকে সভ্যতার পথে পরিচালিত করেছে। এ ছাড়া যুগ পরিক্রমায় বিভিন্ন, মতবাদের উদঘাতা কান্ডারী ও বুদ্ধিজীবীগন নীতি প্রনয়ন করে সুন্দর সমাজ গঠনের চেষ্টা করেছেন।
নীতি প্রনয়নের উপাদানঃ
১। শান্তি কামনাঃ প্রথমত শান্তি ও সূখপুর্ণ পরিতৃপ্ত জীবন পেতে সুন্দর, সহজনীতি পদ্ধতি উদ্ভাবন করে তা প্রতিষ্ঠা করা
হয়।
২। উদ্দেশ্যঃ Motive/Purpose মানব জীবনের আসল উদ্দেশ্য কি? তা যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেমন অনুধাবন
করে, সে অনুযায়ী তারা তাদের নীতি উদ্ভাবন করে ।
৩। লক্ষ্য ঃ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যে কর্মটি সম্পাদন করা হয় তাকেই লক্ষ বলা হয়। যেমন লক্ষ্য হচ্ছে ভাত তরকারী
রান্না করা। উদ্দেশ্য তা খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্তি ও সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করা।
কিন্তু যদি কেউ রুটি খেতে চায়, তাহলে রান্নার নীতি বা পদ্ধতি একটু ভিন্ন করতেই হবে, যদি ও এক্ষেত্রে উদ্দেশ্যর
তেমন কোন পরিবর্তন হবে না।
৪। চিন্তা ও বিশ্বাসঃ মানুষের চিন্তা ও বিশ্বাস যেমন, তার গৃহীত নীতি গুলোও সেরুপ হবে । যেমন কোন পরীক্ষার্থী যদি মনে করে আমার খাতার প্রতিটি অক্ষর পরীক্ষিত হবে, অতএব আমার প্রতিটি অক্ষর সুন্দর ও শুদ্ধ হওয়া দরকার। তাহলে এ পরীক্ষার্থীর অধ্যয়ন,অনুশীলন এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহন সব কিছু সুন্দর হতে বাধ্য। আর কোন পরীক্ষার্থী যদি মনে করে যে এত কিছু যাচাই হবেনা লেখা থাকলেই হলো, পাস চলে আসবে, তাহলে তার ফলাফল কখনোই উওম হবেনা। তেমনি কেউ যদি মনে করে, আমার জীবনে যা ঘটছে তার কোন পুরস্কার বা শাস্তি নেই, জীবন এখানেই শেষ, তাহলে তার প্রতিটি কাজ যতেœর সহিত সুন্দর ও অপরের জন্য কল্যাণ কর করার প্রয়োজন নেই। এটাই মানব নীতির গভীরতম উৎস।
প্রতিটি কল্যাণকর কাজের জন্য, ক্ষমা প্রদর্শনের জন্য, মানুষের দ্বারা প্রতিটি অনিষ্টের যথার্থ ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির মহা সুযোগ সামনে আখিরাতের জীবনে রয়েছে, এ চিন্তা থাকলে কোন ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনের লাভ–খাস্তা নিয়ে মহা টেনশন ও অসহ্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে বৈচিত্রময় এ জীবনকে ধ্বংস করতে পারেনা।
৫। সু–শৃঙ্খল জীবন যাপনঃ প্রতিটি মানুষ উশৃংখলতা, উৎকন্ঠা, অত্যাচার নিপীড়ন ও হতাশা থেকে মুক্তির জন্য
সার্বজনীন সুশৃংখল নীতি কামনা করে।
৬। শুভপরিণতি কামনাঃ প্রতিটি মানুষ তাঁর নিজেকে সবাই ভাল বলুক, শেষ পর্যন্ত একটি ভাল সূখী জীবন প্রাত্ত
হোক, এ আন্তরিক কামনা থেকেই মানুষ সঠিক ও সুন্দর নীতি অনুসারে জীবন যাপন করতে চায়।
সঠিক নীতির উপাদানঃ এসব উপাদানের সহিত “সঠিক”, কথাটি লাগিয়ে দিলে অর্থাৎ নিঃসন্দেহ ভাবে নির্ভূল নীতি প্রনয়ন করতে হলে এবং সেই নীতি সবার জন্য কল্যাণকর হতে হলে নীতি প্রনয়ন কারীকে অবশ্যই অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নির্ভূল জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে। শুধু তাই নয় নির্ভূল নীতির জন্য নীতি প্রনয়ন কারীকে সার্বজনীন কল্যাণ ও অকল্যাণ নিয়ন্ত্রণের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হতে হবে। অন্যথায় সকলের জন্য এবং সর্ব সময়ের জন্য সার্বিক কল্যাণকর নীতি প্রনয়ন সম্ভব নয়।
মানুষের জীবনে নীতি কিরুপ হওয়া উচিৎঃ মানুষের জীবন কি? জীবনের উৎপত্তি কিভাবে হলো, জীবনের মর্যাদা কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, মানব জীবনের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কি? একজন মানুষের সর্বশেষ মঞ্জিল কোনটি? কোনটি গ্রহণ করলে পরিতৃপ্ত জীবন পাওয়া যেতে পারে, নীতি প্রনয়নের জন্য তার সুস্পষ্ট প্রামাণ্য দলিল, উদাহরণ ও মডেল সামনে রাখা আবশ্যক। অন্যথায় মানুষের জন্য যত সুন্দর নীতিই কার্যকর করা হোক তা সুন্দর সমাজ নির্মাণ করতে পারেনা বরং তা চরম দুঃখ ও ধ্বংস সৃষ্টি করবে।
যেমন রেলগাড়ীকে তার জন্য তৈরী রেললাইনেই চালাতে হবে । “রেল” কে বাসের রাস্তায় উঠিয়ে দিলে সৃষ্টি গত কারণেই তা আর চলতে পারবেনা, বরং চরম যানযট সৃষ্টি করে নিজেও অকেজো হয়ে যাবে। অনুরূপ কাপড় তৈরির ফেক্টরীতে বিস্কিট তৈরি করা যাবেনা। যত যতœই করা হোক কুল গাছে আপেল ধরানো যাবেনা।দস্তাকে যতই পরিপাটি ও পরিশীলিত করা হোক তা সোনা হবে না। মানুষের জন্য তার সভ্যতা, বিবেক, বুদ্ধি, অবস্থা, অবস্থান ও চাহিদা মাফিক নীতি নির্ধারিত না হলে পরিণতি শুভ হবেনা।
এবার আসা যাক নীতি ও নৈতিকতার সংজ্ঞায়নেঃ সৃষ্টিগত দিক হতে বিবেক, বুদ্ধি, সামাজিকতা, সভ্যতা , ভদ্রতা, চিন্তা, চেতনা, লজ্জা ও ব্যক্তিত্ব সমন্বয়ে মানুষ সর্বোৎকৃষ্ট সৃষ্টি, যাকে আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব বলা হয়। অন্যান্য প্রাণী কুলের পোশাক–পরিচ্ছদ, পরিচ্ছন্ন ঘরবাড়ি প্রয়োজন হয়না কিন্ত মানুষের তা প্রয়োজন। অন্যসব প্রাণীর মুখ, জিহবা,দাঁত, পেট পাকস্থলী হৃৎপিন্ড, কিডনি, বৃক্ক, লিভার জীবনের অনুভূতি একই রকম হলেও শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করে রান্না বান্না করে খাবার খেতে হয় না, যেখানে রান্না বান্না ব্যাতীত মানুষের পেট একদিনের জন্যও সহ্য করবে না।
অন্যদিকে মানুষকে কে সৃষ্টি করেছে, কোথা হতে, কখন, কিভাবে এবং কেন সৃষ্টি করা হয়েছে তার সর্বশেষ পরিণতি কি হতে পারে এটা কোন গবেষনা বা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রদিয়ে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। চিরন্তন নিয়ম অনুযায়ী যিনি যে যন্ত্র তৈরি করেন তিনিই তার উদ্দেশ্য লক্ষ্য ব্যবহার বিধি ঠিক করে সেই মোতাবেক যন্ত্রটি তৈরি করেন। মানুষের ক্ষেত্রে যিনি এ সভ্য মানুষ সৃষ্টি করেছেন তার শুরু, বিকাশ ও সমাপ্তি বা পরিণতি তিনিই নির্ধারণ করে দিবেন। আর সেটাই হবে মানুষের জন্য সঠিক নীতি ও পদ্ধতি।
যিনি এ জটিল মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় আলো, বাতাস, পানি ও খাদ্য সরবাহের ব্যাবস্থা করেছেন, সর্বোপরি অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের পরিপূর্ণ জ্ঞান সম্পন্ন আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ কর্তা, সেই সত্তাই যদি মানুষের কর্ম পন্থা শিখিয়ে দেন তাহলে তার চেয়ে উৎকৃষ্ট নীতি নিয়ম আর হতে পারে কি?
মানুষের জন্য উপরোল্লিখিত ক্ষমতা ও বৈশিষ্ট্য ব্যতীত সার্বজনীন কল্যাণকর নীতি প্রদান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্তার পক্ষে সম্ভব নয়। অতএব মানুষের জন্য সর্বোত্তম নীতি হচ্ছে “ইন্নাদ্বীনা ইনদাল্লাহিল ইসলাম” সূরা নং–৩ ,সূরা আল ইমরান ,আয়াত নং ১৯ অর্থঃ তোমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একমাত্র মনোনীত জীবন বিধান হচ্ছে ইসলাম
ইসলামই হচ্ছে অবশ্য পালনীয় এবং শ্রেষ্ঠনীতি: পৃথিবীতে সকল ধর্ম ও মতবাদের অনুসারীগন স্ব–স্ব নীতিকে সবোৎকৃষ্ট মনে করে। যেমন মুসলমান তাঁর ইসলাম ধর্মকে, খ্রিষ্টান তাঁর খ্রীষ্ট ধর্মকে, হিন্দু তাঁর হিন্দু ধর্মকে এবং নাস্তিক ধর্মের বন্ধন মুক্ত তাঁর মুক্তবুদ্ধির জীবন কে শ্রেষ্ঠ মনে করে। কিšুÍ প্রশ্ন হলো সবোর্ত্তম নীতি প্রনয়নের ক্ষমতা, জ্ঞান, বৈশিষ্ট্য হতে যদি তার উৎপত্তি না হয়, তাহলে সেই নীতি সাবর্জনীন, সবার জন্য কল্যাণকর ও সবশেষে শুভ পরিণতি লাভের মাধ্যম হতে পারেনা। বরং তা স্বজন প্রীতি, স্ব–ধর্মপক্ষতা ও কালোত্তীর্নের প্রশ্নে তা দোষ যুক্ত হয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়।
ইসলাম ব্যতীত অন্য সব নীতি মানা উচিৎ নয় কেনঃ আর যারা এমন ক্ষমতা রাখেন না, তারা মানুষের জন্য নীতি তৈরি করে তা চাপিয়ে দেয়ার অধিকারী হবার যোগ্য ও নয়। এছাড়া যারা মানুষের চাহিদা পূরণে সক্ষম নন তাদের নীতি মানা হবে কোন যুক্তিতে? মহাগ্রন্থ্র আল কুরআনে বলা হয়েছে “ইয়া আইয়ুহান্নাছু চ‘ুবুধু রব¦াকুমুল্লাজি খালাকাকুম অল্লাজিনা মিন ক্বাবলেকুম লাআল্লাকুম তাত্তাকুন। আল্লাজি জাআলালাকুম আরদা ফেরা শাউ অচ্ছামাআ বেনাআ,অআনজালা মিনাচ্ছামায়ে মাআন ফাআখরাজা বিহি মিনাচ্ছামারাতে রেজকাল্লাকুম, ফালাতাজআলু লিল্লাহে আনদা দাও, অআনতুম তাআলামুন। অ ইনকুনতুম ফি রাইবিমমিম্মা নাজ্জজালনা আলা আবদেনা ফা‘অতুবে সুরা তিম মিম মিসলিহি অদউ সুহাদা আকুম মিন দুনিল্লাহে ইনকুনতুম ছদেকীন। সূরা নং ২, বাকারা, আয়াত নং ২১,২২,২৩।
অর্থঃ হে মানুষ তোমরা ইবাদত কর সেই আল্লাহর যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টি করেছেন তোমাদের পুর্ববর্তীদেরকেও, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার। তিনি তোমাদের জন্য জমিনকে বিছানা এবং আকাশকে করে দিয়েছেন ছাদ। অতপর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে জমিন কে উজ্জীবিত করে তোমাদের জন্য রিযিকের ব্যবস্থা করেছেন। সুতরাং তোমরা জেনে শুনে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ দাড় করিওনা। (অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত, নীতি নিয়ম গ্রহন করোনা) অতপর তোমরা যদি কুরআনের ব্যাপারে সন্দেহ পোষন কর, তাহলে অনুরুপ একটি সূরা (বা অনুরুপ কুরআন) তৈরি করো,“ এ ব্যাপারে ডেকে আনো আল্লাহ ব্যতীত অন্য সকল সাহায্য কারীদের। যদি তোমরা সত্য বাদী হয়ে থাক। অতএব যিনি লালন পালনের সুব্যবস্থা দিয়েছেন তার নীতি পরিহার করা ন্যায় পরায়ণতার লঙ্ঘন।
নীতি ও নৈতিকতার বাস্তব মডেল ঃ আইয়্যামে জাহেলিয়ায় যখন সমগ্র বিশ্ব মানবতা অশান্তির আগুনে নিমজ্জিত তখন আল্লাহ প্রদত্ত উপরেল্লিখিত নীতি (ইসলাম) অনুযায়ী সর্বদিক হতে মানব চরিত্রে ও সমাজে সর্বোত্তম শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছিল; যার লক্ষ কোটি প্রমাণ পরিস্কার ভাবে স্বীকৃত। আমরা যে মনুষ্যত্বের ডাকঢোল পিটাই, তার পরম পুর্ণতা সেই নীতির আলোকে গড়ে ওঠা মানুষগুলোর (সাহাবীদের) চরিত্রে দেখতে পাই; যা অন্য কোন ধর্ম বা মত বাদের নীতিতে কখনোই পাওয়া যায় নি ।
মানুষের সর্বোত্তম পরিণতিঃ এই নীতিতে (ইসলাম) মানুষের সর্বোত্তম ঠিকানা জান্নাত,“যা সকল মানুষের একান্ত কাম্য। এই নীতিতে মানুষের মৃত্যুকালীন অবস্থা, কেয়ামত হাশর এসব কিছুর প্রকৃষ্ট প্রমাণ আল্লাহর প্রেরিত পূরুষ মুহাম¥দ (সঃ) এর জবান ও আচরণে পরিলক্ষিত হয়েছিল, পরিলক্ষিত হয়েছিল তার সাহাবীদের মধুময় চরিত্রে। এর পরেও যদি মানবতা তাঁর কাঙ্খিত সঠিক নীতি পদ্ধতি খুজে না পায়, তাহলে রেল গাড়িকে সড়ক পথে চালালে যা হয়, তাদের জীবনে তাহাই হওয়া উচিত।
উপসংহারঃ মানব সমাজে সঠিক নীতি প্রতিষ্ঠিত হলে পৃথিবীর অন্য সকল ক্ষেত্রে পশু পাখি কীট পতঙ্গ , বন জঙ্গল, সাগর মহাসাগর, সড়ক–মহাসড়ক, মহাশুন্য সহ সর্বত্র শৃংখলা প্রতিষ্ঠিত হতে বাধ্য। কারণ মানুষের আচরনের আলোকেই তার পালিত গরু ছাগল, হাতি–ঘোড়া, ইত্যাদির খাদ্য অভ্যাস, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, আচার আচরণ গড়ে ওঠে। অতএব সঠিক নীতি ও নৈতিকতাই সর্ব পর্যায়ে সবদেশে সুষ্ঠু সভ্যতা বিনির্মাণের সঞ্চালক।
মোহাম্মদঃ ওয়ালী উল্লাহ
সিনিয়র প্রভাষক (বাংলা)
কাচিয়ারা জামালীয়া আলিম মাদ্রাসা
মতলব দক্ষিণ,চাদপুর।
professoroliullhah@gmail.com
Facebook Md Oliullhah
মোবাইলঃ ০১৯২৬৪৭৩০২৭