প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য মাধ্যম থেকে পাওয়া তিন শতাধিক নাম যাচাই বাছাই করে ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে সার্চ কমিটি।
এখান থেকে ১০ জনকে চূড়ান্ত করে তালিকা করা হবে। পরে তা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেয়া হবে। এজন্য আরো দুয়েকটি সভায় বসতে হবে বলে জানিয়েছেন সাচিবিক দায়িত্ব পালন করা মোঃ সামসুল আরেফিন। ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেয়ার জন্য কমিটির হাতে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় আছে।
আজ শনিবার বেলা সোয়া ১১টা পর সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বে সার্চ কমিটির বৈঠক শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে কজের অগ্রগতি তুলে ধরেন সামসুল আরেফিন।
তিনি বলেন, ‘আজকের সভায় আইনে বর্ণিত যোগ্যতা অনুসারে প্রস্তাবিত নামসমূহ থেকে ২০ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। আগামী দুই-একটি সভায় চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হবে।’
সেজন্য রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় কমিটি আবারো বসবে বলে জানান তিনি।
১০ জনের চূড়ান্ত তালিকা কখন পাওয়া যেতে – এই প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘আরো দুয়েকটা মিটিং হবে। এরপর যাবতীয় সব আপনারা জানতে পারবেন।’
আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে কমিটির সদস্য হাই কোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন, লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী এবং সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি এই সার্চ কমিটি করে দেয়ার পর সদস্যরা এর আগে নিজেদের মধ্যে চার দফা বৈঠক করেছেন। আর বিশিষ্টজনদের নিয়ে বসেছেন তিন দফা।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে এবং বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায় সোয়া তিন শ’ নামের প্রস্তাবও পেয়েছে এ কমিটি, যা নিয়ে গত বুধবার সর্বশেষ বৈঠক হয়।
সার্চ কমিটির হাতে আসা ওই নামের তালিকায় অধিকাংশই অধ্যাপক, বিচারপতি, সাবেক সচিব, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা।
আইনে বলা হয়েছে, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে সার্চ কমিটি। আইনে বেঁধে দেয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি পদের জন্য দুইজন এবং নির্বাচন কমিশনারের চারটি পদের জন্য আটজনের নাম তারা প্রস্তাব করবে রাষ্ট্রপতির কাছে।
সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে কাউকে সুপারিশের ক্ষেত্রে তার তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে। তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে; বয়স ন্যূনতম ৫০ বছর হতে হবে; কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত পদে বা পেশায় পদে অন্তত ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
ওই তালিকা থেকে পাঁচজনকে বেছে নিয়ে রাষ্ট্রপতি গঠন করবেন ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন। তাদের মধ্যে একজন হবেন সিইসি, বাকিরা নির্বাচন কমিশনার। আর তাদের উপরই থাকবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার।