বৃহস্পতিবার , ফেব্রুয়ারি ১৩ ২০২৫
চাঁদপুর সদর উপজেলা কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান

“দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাইলে জামায়াতের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে“

আদনান মুরাদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর সদর উপজেলা শাখার ঐতিহাসিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) চাঁদপুরের ঐতিহাসিক পুরাতন বাসসট্যান্ডে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

চাঁদপুর সদর উপজেলা শাখার আমীর মাওলানা আফসার উদ্দিন মিয়াজীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. যুবায়ের হোসাইনের পরিচালনায় কর্মী সম্মেলনে প্রধন অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রিয় জামায়াতের নায়েবে আমীর সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী,  চাঁদপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এডভোকেট শাহজাহান মিয়া, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল হোসাইন।  চাঁদপুর শহর আমির অ্যাডভোকেট শাহজাহান খান, শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন এর জেলা সহসভাপতি মোঃ শাহআলম প্রমুখ।

 

সমাবেশ বিকাল ২টায় শুরু হলেও দুপুর থকেই নেতাকর্মীরা মিছিল ও মুহুর্মুহ স্লোগান নিয়ে সমাবেশ স্থলে প্রবেশ করে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে প্রবেশ করে। তাদের হাতে শোভা পায় জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।

জামায়াতের প্রয়াত নেতাদের বানী সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার এবং জুলাই বিপ্লব সংবলিত ব্যানারে ছেয়ে যায় সমাবেশের চারপাশ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন- ১৭ বছর জালেম সরকারের অত্যাচারে মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলো। আ.লীগ ভেবেছিলো ৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু তাদেরকে আল্লাহ অপমানিত করে দেশ থেকে বের করে দিয়েছেন।

তিনে আরো বলেন, দেশে ভালো কাজ চালু করে মানুষকে শান্তি দিতে হলে, খারাপ কাজ বন্ধ করে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হলে শুধু দোয়া মাহফিলের আয়োজন করলে চলবে না। বরং আল্লাহর দল তৈরি করেই এগুলি বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, ঐক্যই হচ্ছে শক্তি। প্রত্যেক মুসলমান ঐক্যবদ্ধ হলেই বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে গঠিত হবে। এর জন্য জামায়াতে ইসলামী যে কোন ইসলামী দলের সাথে ঐক্য করতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, ২০২৪ এর অভ্যুত্থান ছিলো ন্যায়ের পথের অভ্যুত্থান, কুরআন সুন্নাহর পক্ষের অভ্যুত্থান, কোন নাস্তিকদের অভ্যুত্থান না।

১৯৭১ এ দেশবাসী বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলো, ভোটের অধিকারের জন্য, ভাতের অধিকার এর জন্য আন্দোলন করেছিলো  কিন্তু ভারতীয় আধিপত্য বাদের কারনে এদেশের মানুষ তাদের অধিকার বঞ্চিত হয়েছে।

১৯৭৪ এর দূর্ভিক্ষে বহু মানুষ মারা গেছে, একজন বমি করলে আরেকজন খেয়েছে, মজিব গনতন্ত্র ধ্বংস করে বাকশাল কায়েম করেছে। মিডিয়ার স্বাধীনতা বন্ধ করেছে।

সর্বশেষ তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দিনের ভোট রাতে করেছে, একজনের ভোট আরেকজনকে দিয়েছে।

নির্বাচনে শিক্ষকদের বাধ্য করে ভোটের হার ৪% কে ৪১% করেছে। গনতন্ত্রকে হত্যা করে কবর দিয়েছে।

অধ্যাপক মজিবুর রহমানবলেন,  ইসলাম কায়েম হলে কোন বৈষম্য থাকবে না। ইসলাম না থাকলেই যাবতীয় বৈষম্য দেখা দিবে। আগামী দিনে যদি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চান তাহলে ইসলাম রাষ্ট্রক্ষমতায় আনতে হবে। এই জন্য জামায়াতে ইসলামীর সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন,  ভালো, নিরপেক্ষ নির্বাচন চাইলে সংস্কারের জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব।

সমাবেশে চাঁদপুর ৩ (সদর-হাইমচর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর এমপি প্রার্থী হিসেবে এডভোকেট শাহজাহান মিয়াকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

উক্ত সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত নেতা আব্দুলহাই লাভলু, আইজীবী ওয়ার্ড এর সভাপতি এডভোকেট মামুন মিয়াজী, চাঁদপুর জর্জকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল কাদের খান, চাঁদপুর শহর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম সবুজ, সদর উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদ, চাঁদপুর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি এস এম মিজানুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবির এর সাবেক জেলা সভাপতি জাকারিয়া মহিউদ্দিন,  জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর শহর সেক্রেটারি শেখ বেলায়েত হোসেন,  বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চাঁদপুর জেলা সভাপতি মহররম আলী,  চাঁদপুর শহর সভাপতি ফারুক হোসাইন, চাঁদপুর সদর উপজেলা সাবেক আমীর নাছির উদ্দিন, জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য মাও. মীর হোসাইন সহ অন্যান্যরা।