ঈদ সামনে রেখে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। সেই সঙ্গে নৌযানে পণ্য মজুদ রেখে ‘ভাসমান গুদাম’ বানানোর বিরুদ্ধেও চলছে অভিযান। ঢাকা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত নৌপথে ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
কোস্ট গার্ডের ঢাকা অঞ্চলের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তাকীউল আহসান বলেন, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জের পাগলা স্টেশনের দ্রুতগতির ১৮টি স্পিড বোট দিন-রাত নৌপথে টহল দিচ্ছে। আর এ সময়ে নৌযানে ভাসমান গুদাম বানানোর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে মজুদ করে কোনো পণ্যের দাম যেন বাড়াতে না পারে, সেজন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
কোস্ট গার্ড সূত্র বলছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫ টি বাণিজ্যিক ও লাইটার জাহাজে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযানের মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাসে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের মতো ভোজ্য তেলের সংকট ও দাম কমে যাবে বলে আশা করা যায়।
জানা যায়, গত ২২ ডিসেম্বর চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে নৌযানে ৭ খুনের ঘটনা ঘটে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোয় ২৪ ঘণ্টা টহল দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের সমুদ্র বন্দর, বহির্নোঙরে অবস্থানরত বৈদেশিক বাণিজ্যিক জাহাজ এবং অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলরত নৌযানের সার্বিক নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে কোস্ট গার্ড। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটের নৌযানগুলোর নিয়মিত রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস ইত্যাদি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করছে তারা।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লাইটার ও ট্যাংকারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী ও ভোজ্য তেলবাহী জাহাজকে নোঙ্গর এলাকায় ৭২ ঘণ্টার বেশি অবস্থানের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব জাহাজ যেন দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিত করতে কোস্ট গার্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
কোস্ট গার্ডের এক কর্মকর্তা জানান, বহির্নোঙ্গরে ছিঁচকে চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক পাচার এবং বাণিজ্যিক জাহাজে অবৈধভাবে ক্রয় বিক্রয় বন্ধে বছরব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। চোরাই মালামাল বিক্রয়ের স্থানে নিয়মিত যৌথ অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে এসব অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
কোস্ট গার্ড সুন্দরবন পর্যটক-বাহী জাহাজের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে। গহীন সুন্দরবনে টুরিস্টদের জরুরি সেবা এবং অসুস্থ টুরিস্টদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর মাধ্যমে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করছে।
সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশীল করার লক্ষ্যে সমুদ্র, উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে কোস্ট গার্ড। তবে সীমিত জনবল নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা সমস্যায় পড়ছে। এ কারণে দ্রুত তাদের জনবল অন্তত ১০ হাজারে উন্নীত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।