আবু সুফিয়ান ভুইয়া
মহামারি করোনাভাইরাসের ভীতি কাটিয়ে ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে চাঁদপুর জেলা শহর। শহরের পাড়ার দোকান থেকে শুরু করে ছোট বড় বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে ভিড় বাড়ছে আগের তুলনায়। এখন পর্যন্ত গণপরিবহনে যাত্রী কম হলেও অন্যান্য যানবাহনে যাতায়াত ক্রমেই বাড়ছে।
গত কয়েক দিনে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও খোজ নিয়ে জানা গেছে, মীর শপিংকপ্লেক্স, হকার্স মার্কেট, হাকিম প্লাজা, হাজী মহসিন ও জেএন সেন গুপ্ত রোড ঘুরে দেখা গেছে, পাড়া মহলা থেকে শুরু করে ছোট বড় মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে অসংখ্য ক্রেতা। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে মার্কেটে এসেছেন। ক্রেতাদের উপস্থিতিতে বিক্রেতাদের মুখেও হাসি ফুটেছে।
কথা হয় বেশ কয়েক জন দোকানির সাথে, তারা জানান- গত ১ জুন থেকে মার্কেট খোলা থাকলেও মূলত এ মাসের শুরু থেকে তুলনামূলকভাবে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি দেখা যাচ্ছে। এখন যারা মার্কেটে আসছেন তারা কেনাকাটা করতে আসছেন। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। বড় বড় মার্কেট ও শপিংমলের প্রবেশপথে জ্বর পরিমাপক যন্ত্র এবং জীবাণুনাশক টানেলের ব্যবস্থা থাকলেও ফুটপাতে এসবের বালাই নেই। অধিকাংশ ক্রেতা এবং বিক্রেতার মুখে মাস্ক পরিধান করতে দেখা গেলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না। তবে কাউকে কাউকে আবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়।
স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে কেনাকাটা করতে মীর শপিংকমপ্øেক্সে আব্দুস সাবিত। তিনি বলেন, গরমের মধ্যেও দোকানিরা এসি চালাচ্ছেন না। একদিকে বেচাকেনা কম হওয়া অপরদিকে এসির বাতাসের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, তাই এসি চালাচ্ছেন না বলে অনেক দোকানি তাকে জানান।
মীর শপিং কমপ্লেক্সে এক দোকান জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় রবিবার ও মঙ্গলবারে ক্রেতার ভিড় বেশি থাকে। বেচাকেনা যাই হোক করোনা ভীতি কাটিয়ে লোকজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছে এতেই তিনি খুশি বলে জানান। শপিংমলগুলোতে ফুটপাতে বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। ফুটপাতের হকাররা জানান, এই করোনাকালেও নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ করতে হচ্ছে। অন্যথায় তাদের ফুটপাতে বসতে দেয়া হয় না। একদিকে ভাড়া বেশি অপরদিকে বাসে উঠলে সংক্রমণের ঝুঁকির আশঙ্কায় যাত্রীরা সাধারণত কম বাসে উঠছেন। অধিকাংশ যাত্রী রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাতায়াত করছেন।
জোড়পুকুর পাড় বই কিনতে যাওয়া ট্রাকরোড়ের বাসিন্দা বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুল কাদের। প্রয়োজনীয় বই কিনতে রিক্সা যোগে তিনি জোড়পুকুর পাড় যান। রিক্সায় উঠার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে রিকশার সিটে স্প্রে করে তবেই উঠে বসেন বলে জানান। আব্দুল কাদের বলেন, রাস্তাঘাটে এত মানুষের ভিড় দেখে ভয় লাগছে। কখন কার মাধ্যমে কে যে আক্রান্ত হয় বলা মুশকিল। সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে তিনি যেকোনো যানবাহনে উঠার সময় নিজের কাছে থাকা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নেন।
তবে আব্দুল কাদের মতো খুব কম লোকই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করছেন। অধিকাংশ মানুষই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীন। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলেরও অনুরোধ জানান।