বুধবার , মার্চ ১৯ ২০২৫

কচুয়ায় আগুনে পুড়ে শিশুশিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

কচুয়ায় স্কুলে দগ্ধ হয়ে শিশুশিক্ষার্থী সামিয়া আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় এবার প্রধান শিক্ষক মাসুদ হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোসাদ্দেক হোসেন। এর আগে স্কুলটির শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল সামিয়া। গত ২১ জানুয়ারি স্কুলে খেলার সময় দগ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৬ জানুয়ারি মৃত্যু হয় সামিয়ার।

ঘটনার পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে প্রাথমিকভাবে চরম গাফিলতির কারণে শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত, দপ্তরির চুক্তি স্থগিত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক দরখাস্ত করার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সুপারিশ পাঠানো হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের উপপরিচালক আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসের মামলার শুনানি শেষে প্রয়োজনীয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাঁরা স্কুলে নিয়মিত উপস্থিতি হলেও ক্লাস নিতে পারবেন না। তাদের স্থলে অন্যত্র থেকে জন শিক্ষক দেওয়া হয়েছে বলে জানায় উপজেলা শিক্ষা অফিস।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে ছুটির পর তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলছিল সামিয়া। সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ময়লার স্তূপে আগুন লাগান স্কুলটির দপ্তরি। এটি দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে আরেক শিশুশিক্ষার্থীর সঙ্গে খেলছিল সামিয়া। একপর্যায়ে সামিয়ার পোশাকে আগুন লেগে যায়। এতে দগ্ধ হয় সে।

সামিয়ার পরিবারের অভিযোগ, সামিয়ার গায়ে আগুন লাগার পরপর তার গায়ে পানি দেননি বা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেননি শিক্ষকেরা। এতে সে আরও বেশি দগ্ধ হয়। সামিয়াকে ওই অবস্থায় তাঁর বড় বোন লামিয়ার মাধ্যমে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তাঁরা। এরপর সামিয়াকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যেরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জানুয়ারি মারা যায় সামিয়া।

এদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে চাঁদপুরের হাজার ১৫৬টি সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় সচেতনতামূলক বার্তা পাঠিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। স্কুল চলাকালীন সময়ে শিক্ষকদের সচেতন থাকার আহবান জানানো হয়েছে এতে।