নামে-বেনামে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের শেয়ার সরকারের জিম্মায় থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বুধবার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
গভর্নর বলেন, ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সরকারের সহযোগিতায় ছোট আকারে বোর্ড গঠন করা হবে। পাশাপাশি দুই একদিনের মধ্যেই স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখন ইসলামী ব্যাংকে এস আলম গ্রুপ বা তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কারো নামে এককভাবে দুই শতাংশের বেশি শেয়ারধারী নেই। তাই পরবর্তীতে যখন কোনো শেয়ারহোল্ডার দুই শতাংশ শেয়ারের মালিক হবেন তখন তাদের মধ্য থেকে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র বলছে, নামে বেনামে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৮২ শতাংশ শেয়ারই এস আলম গ্রুপের দখলে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন পর্ষদে বেশিরভাগ স্বতন্ত্র পরিচালক হতে পারে।
ইসলামী ব্যাংকে এস আলম গ্রুপ কেবল ঋণ জালিয়াতি বা নিয়োগ পদোন্নতিতে অনিয়ম করেছে তেমন না। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো একটি ব্যাংকে একক ব্যক্তি, পরিবার বা গোষ্ঠী সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা নিতে পারে। ইসলামী ব্যাংক দখলের পর নামে-বেনামে ২৪ প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১৩১ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ১৬৫টি শেয়ারের মালিকানা নিয়েছে এস আলম গ্রুপ, যা ব্যাংকটির মোট শেয়ারের ৮১ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এ ক্ষেত্রে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এস আলমের ছেলে আহসানুল আলমের মালিকানাধীন জেএমসি বিল্ডার্সের নামে শেয়ার রয়েছে ৩ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার ৮১২টি, যা ২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এ ছাড়া বিটিএ ফাইন্যান্স, প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল, এবিসি ভেঞ্চারস, এক্সেল ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, প্ল্যাটিনাম এনডেভার্স, এক্সেলশিয়ার ইমপেক্স, গ্র্যান্ড বিজনেস, লায়ন হেড বিজনেস রিসোর্সেস, বিএলইউ ইন্টারন্যাশনাল, আর্মদা স্পিনিং মিলস, কিংসওয়ে এনডেভার্স, ইউনিগ্লোব বিজনেস, সোলিভ ইন্স্যুরেন্স, হলিস্টিক ইন্টারন্যাশনাল, হাই ক্লাস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ক্যারেলিনা বিজনেস, ব্রিলিয়ান্ট বিজনেস, ব্রডওয়ে ইম্পেক্স, পিকস বিজনেস, এভারগ্রিন শিপিং, ম্যারাথন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, কিংস্টোন ফ্লাওয়ার মিলস ও পারসেপ্টা এনডেভার্স- এসব প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নামে ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার রয়েছে।