নাসা-র উপগ্রহ ‘অ্যাকোয়া’ সম্প্রতি ভারত মহাসাগরের উপর থেকে ছবি পাঠিয়েছিল। সেখানে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ থেকে আবহবিদরা ধারণা করেন, শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় হয়ে আছড়ে পড়বে আমপান। নাসা-র বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস ছিল, এর ফলে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা।
ঘূর্ণিঝড় আমফান স্থলভাগ অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে গেছে। বাংলাদেশ উপকূলে নয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের দিঘা উপকূলে প্রথম আঘাতটা করেছে। শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি অনেকটাই দুর্বল হয়ে স্থলভাগে উঠেছে। স্থলভাগে উঠার সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে গতি ছিল ঘন্টায় ১৬০ কিলোমিটার। তবে এটা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার সাথে গতি বাড়িয়ে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছিল।
সাগরে অবস্থানের সময় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক কিলোমিটার দূরে এটা ছিল ক্যাটাগরি-৫ হ্যারিকেন সম শক্তিশালী একটি সুপার সাইক্লোন। সাগরে অবস্থানের কালে এর সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠে ঘন্টায় ২৪৫ কিন্তু বুধবার বিকালে স্থলভাগে উঠার সময় আমফান ক্যাটেগরি-২ মানের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে যায়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছেন, বুধবার বিকাল ৪টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের পূর্ব পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন এলাকায় অবস্থান করছিল। আমফান আরো উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পরবর্তি ৩ থেকে ৪ ঘন্টার মধ্যে উপকূল রেখা অতিক্রম করে।
গত দু’বছরে এটা বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্টি হওয়া দ্বিতীয় প্রাক-বর্ষা ঘূর্ণিঝড়। গত বছর বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্টি হয়েছিল প্রাক-বর্ষা ঘূর্ণিঝড় ফণী। আমপান বা উমপুন শব্দের অর্থ ‘আকাশ’। এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে থাইল্যান্ড।
অনুযায়ী আগামী কিছু ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণও করা আছে। তার মধ্যে ‘নিসর্গ’ নামটি দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের দেওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘গতি’। ‘নিভার’ নামের প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। মালদ্বীপের দেওয়া নাম ‘বরেভি’, মায়ানমার নামকরণ করেছে ‘তোক্তাই’, ওমান নাম দিয়েছে ‘ইয়াস’। এগুলি সবই ভবিষ্যতে যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে, তার জন্য ঠিক করা হয়েছে। আনন্দবাজার।