চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে বিদায়ী চাঁদপুর জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এ সংবর্ধনা প্রদান করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী’র সভাপতিত্বে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমার বিদায়লগ্নে এত স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য চাঁদপুর প্রেসক্লাবকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমি কখনোই আমার ব্যক্তিগত বিষয় ফেসবুকে শেয়ার করি না।
গত চৌদ্দমাস চাঁদপুরে দায়িত্ব পালনকালে মানুষের ভালোবাসা ও প্রশংসা পেয়ে আমি সত্যিই অভিভূত। তবে কিছু কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে, এজন্য কেউ কেউ আমাকে ভিন্নভাবে দেখেছেন, যা আমি স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করি।
বিদায়ী জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ফেসবুকে আমাকে নিয়ে কেউ কেউ প্রশংসা করেছেন, কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন। এটাকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি । আবার অনেক জেলা প্রশাসককে নিয়ে সাংবাদিকরা ভালো মন্তব্য করেছেন, এগুলো থেকেও শেখার আছে। জেলা প্রশাসকের কাজ অনেক বিস্তৃত। সমাজের শৃঙ্খলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, উন্নয়ন পরিকল্পনা সবকিছুতেই শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের।
এ সময় তিনি সাবেক জেলা প্রশাসকদের কাজের প্রশংসা করে বলেন, তারা সাধারণ মানুষের জন্য যেভাবে কাজ করেছেন, তা সত্যিই অনুকরণীয়। এ সময়ে আমি সমাজের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চেষ্টা করেছি। দেশের কঠিন সময়ে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে যতটা পেরেছি কাজ করার চেষ্টা করেছি। যারা সমালোচনা করেছেন, তাদের কথায় মনোযোগ না দিয়ে বরং সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমি আপনাদের মাধ্যমে সব রাজনৈতিক, সাংবাদিক ,সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
জেলার উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি সরকারের কাছে চাঁদপুরের উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেছি। জেলা মেডিকেল কলেজের জন্য ভূমি নির্ধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৫৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং প্রতিটি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে কাজ করেছি। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় স্টেডিয়াম মাঠ নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি অফিস আদালতে স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করেছি। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গনঅধিকার, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। সকলেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোঁজ খবর রেখেছেন এবং সহযোগিতা করেছেন ।
বিদায়ী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, আমি স্বপ্ন দেখি এবং করার সাহস রাখি। চাঁদপুরের সিভিল সোসাইটি, প্রেসার গ্রুপ ও সাংবাদিকদের জন্য আমি কিছু সম্ভাবনার দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি, যা নিয়ে ভবিষ্যতে আপনারা কাজ করতে পারবেন।
বিদায়ী জেলা প্রশাসকের অনুভূতি প্রকাশের পর বিদেশ থেকে অনলাইনে(ভার্চুয়ালী) বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশা।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ জালাল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সাবেক সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহীন, মির্জা জাকির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধর, দৈনিক প্রভাতী কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুল আউয়াল রুবেল, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন লিটন, সময় টিভির চাঁদপুর স্টাফ রিপোর্টার ফারুক আহমদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম রনি, কোষাধ্যক্ষ কে এম সালাউদ্দিন, দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জাকির হোসেনসহ প্রেসক্লাবের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
