বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) তার ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে তিনি এই শুভেচ্ছাবার্তা দেন।
ওই পোস্টে তারেক রহমান লেখেন, ‘আমি বিএনপির ৪৬তম প্রষ্ঠিাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ১ সেপ্টেম্বর দিনটি বাংলাদেশি মানুষের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। ১৯৭৮ সালের এই দিনে এক শুভক্ষণে স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাকশালী ব্যবস্থায় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। শুধুমাত্র একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য। সেই মৃত গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশে বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের আবারও পথচলা শুরু হয়। শহীদ জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি বিগত ৪৬ বছরে কয়েকবার সবার অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠুু নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যাণে কাজ করে গেছে। আমি স্বাধীনতার মহান ঘোষক, সফল রাষ্ট্রনায়ক ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।
তারেক রহমান আরও লেখেন, ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের এই প্রিয় দল অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। নির্বাসিত গণতন্ত্র আদায়ে নির্ধিধায় অকাতরে জীবন উৎসর্গ করেছে অসংখ্য নেতাকর্মী। ৮০’র দশকে ৯ বছরের সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির রাজপথে আপোষহীন ভূমিকা ইতিহাসের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়। তাঁর সেই অগ্রণী ভূমিকার জন্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনের সময় সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন গণতন্ত্রের অনন্য প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বিএনপির বলিষ্ঠ ভূমিকা জনগণ কর্তৃক সবসময় সমাদৃত হয়েছে। গণতন্ত্র সমুন্নত ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিএনপির উদ্যোম ও উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে দলটি দেশবাসীর কাছে এখন সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈদিক দল। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুন্ন রেখে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেদের নিবেদন করে বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখবে ইনশা আল্লাহ। জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত দলের যে সমস্ত নেতাকর্মী মারা গেছেন ও দেড় দশকের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাস এবং সম্প্রতি ছাত্রজনতার রক্তঝরা আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন এবং সম্প্রতি পূর্বাঞ্চলের বন্যায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন আমি তাদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এখন গণতন্ত্রকে নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে। আইনের শাসন, মত প্রকাশ, সংবাদ পত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই দেড়যুগ ব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের আত্মদান সার্থক হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভলগ্নে আমাদের অঙ্গীকার হোক বাংলাদেশকে নিপীড়ন-নির্যাতনসহ সব পৈশাচিকতা মুক্ত একটি সুস্থির-শান্তিময় নাগরিক অধিকার সুরক্ষার দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। দেশজুড়ে যেন আর কখনোই গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নারী ও শিশুদের ওপর পৈশাচিকতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, টাকা পাচারের মতো ঘৃণ্য বিভীষিকার পুনরাবৃত্তি না হয়। জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য। এবারে দেশের পূর্বাঞ্চলে প্রলয়ংকারী বন্যার কারণে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পাঁচ দিনব্যাপী কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে একদিন করা হয়েছে। বিএনপি জনগণের দল, এই মুহূর্তে দেশের একটি বড় অঞ্চলে বন্যায় পানিবন্দি মানুষ ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সহায়তা করাই সবচেয়ে বড় কাজ। আমি তাই আবারও দলের সকল নেতাকর্মীকে বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।