বৃহস্পতিবার , নভেম্বর ১৩ ২০২৫

আগামী বছরেই শুরুতে দৃশ্যমান হবে মতলব উত্তর-গজারিয়া সেতু

মতলব উত্তরে ৪ হাজার ৭শ’ ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে মতলব উত্তর-গজারিয়া সেতু। আগামী বছরের শুরুতেই এই সেতুর কাজ দৃশ্যমান হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্ল্যাপুর ইউনিয়নের জামালপুর এলাকায় প্রস্তাবিত সেতু নির্মাণস্থল পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন তিনি।

সেতু সচিব বলেন, ব্যয়বহুল এই ঝুলন্ত সেতুটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসর হচ্ছে। আশা করছি, আগামী বছরের প্রথমার্ধেই এই সেতুর দৃশ্যমান অগ্রগতি চোখে পড়বে। সেতুটি নির্মিত হলে ঢাকা থেকে গজারিয়া-মতলব হয়ে চাঁদপুর, ফেনী হয়ে চট্রগ্রামে যাতায়াতের ক্ষেত্রে দুরত্ব অনেকাংশে কমে আসবে। ফলে ঢাকা সহ আশপাশ অঞ্চলের শিল্প কারখানার উৎপাদিত পন্য বন্দর নগরী চট্রগ্রাম দিয়ে বিদেশে রপ্তানী সহজতর হবে। চট্রগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, চাঁদপুর সহ দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতে দূরত্ব অনেক কমে আসবে এবং এতে সময় ও ব্যয় দুটোই কমে আসবে।

সেতু মন্ত্রণারয় সূত্রে জানা যায়, মতলব-গজারিয়া ঝুলন্ত সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। এর আওতায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও চাঁদপুরের মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু নির্মিত হবে। সেতুর দৈর্ঘ্য ১.৮৫ কিলোমিটার। সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ৭.৫১ কিলোমিটার (গজারিয়া অংশে ৫.৪৬০ কিলোমিটার ও মতলব উত্তর অংশে ২.০৫৫ কিলোমিটার)। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘ-১ এর সাথে ইন্টারচেঞ্জ ডেভেলপমেন্ট ২.১ কিলোমিটার। নদী শাসন কাজের দৈর্ঘ্য ২.২ কিলোমিটার। টোল প্লাজা একটি এবং ওজন স্টেশন হবে দুইটি। ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স হবে ২৫ মিটার। এই সেতু বাস্তবায়ন হলে জিডিপি প্রবৃদ্বির হার বাড়বে ০.২৩%। গজারিয়া-মতলব সেতুটি ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে বিকল্প সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে।

সেতুটির মধ্যে নদীর মূল প্রবাহে কোন পিলার থাকবে না। এজন্য নদীর প্রবাহে কোন বাধা সৃষ্টি হবে না। সেতু নির্মাণে ই ডি সি এফ (ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড) কোরিয়া এক্সিম ব্যাংক সহজ শর্তে (০.০১%-০.০৫%) হারে ঋণ দিবে ৩,৫১৩ কোটি ৯৫ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা এবং সরকারি ঋণের পরিমাণ ৬৬০ কোটি ৭২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। টাকা ফেরত প্রদানের ম্যাচিউরিটি পিরিয়ড ৪০ বছর এবং গ্রেস পিরিয়ড ১৫ বছর।

পরিদর্শনকালে সড়ক ও সেতু বিভাগের যুগ্ম সচিব ভিখারুদৌল্লা, যুগ্ম সচিব নুরুল হক, ডাইরেক্টর এডমিন আলতাফ হোসেন, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহসীন উদ্দিন, ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম সাহেদ’সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।